Bar Dancer

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও অনড় মহারাষ্ট্র, ডান্স বার বন্ধে আসছে অর্ডিন্যান্স

সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী সুধীর মুনগান্তিওয়ার জানিয়েছেন, ‘‘ডান্স বার বন্ধ করতে আমরা পিছপা হব না। রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং মানুষের স্বার্থে আমরা প্রয়োজনে অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসব।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৯
Share:

মুম্বইয়ের একটি ডান্স বার। ফাইল চিত্র।

নিয়ন্ত্রণ আনা হোক, কিন্তু নিষিদ্ধ করা যাবে না—মুম্বইয়ে ডান্স বার চালু করতে বৃহস্পতিবার এই কথাই জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি ‘হোটেল, রেস্তরাঁ এবং বারে মহিলাদের মর্যাদা রক্ষা’-য় ২০১৬ সালে তৈরি করা মহারাষ্ট্র সরকারের একটি আইনের বেশ কিছু ধারাও বাতিল করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। মনে করা হচ্ছিল, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে ফের খুলতে পারে মুম্বইয়ের বন্ধ হয়ে যাওয়া ডান্স বারগুলি। একদিন পর অবশ্য মহারাষ্ট্র সরকার জানাল, ডান্স বার বন্ধ করতে অর্ডিন্যান্স আনবে তারা। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে সামনে এল ডান্স বার বন্ধ করতে তাদের অনড় অবস্থানের বিষয়টিই।

Advertisement

মহারাষ্ট্র সরকারের বক্তব্য, রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করার স্বার্থেই ডান্স বার চালু করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের রায়কে সম্মান জানালেও ডান্স বার বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর তারা। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী সুধীর মুনগান্তিওয়ার জানিয়েছেন, ‘‘ডান্স বার বন্ধ করতে আমরা পিছপা হব না। রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং মানুষের স্বার্থে আমরা প্রয়োজনে অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসব।’’

আগামী সপ্তাহে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অর্ডিন্যান্স আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে।সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সুধীর মুনগান্তিওয়ার জানিয়েছেন, ‘‘ আমরা সুপ্রিম কোর্টের পুরো নির্দেশ হাতে পাওয়ার অপেক্ষা করছি। আদালতের সমস্ত সুপারিশ খতিয়ে দেখা হবে। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই আনা হবে অর্ডিন্যান্স। প্রয়োজন পড়লে বর্তমান আইনটিকেই আরও কঠোর করা হবে।’’ সে ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হবে কিনা, এই প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী জানান, মহারাষ্ট্রের সমস্ত রাজনৈতিক দলই ডান্স বার বন্ধ করতে একমত। সেই কথা মাথায় রেখেই আইন বানানো হবে বলে জানান তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: নর্তকীদের উদ্দেশে টাকা ওড়ানো যাবে না, তবে মুম্বইয়ে ডান্স বারে সায় সুপ্রিম কোর্টের

ডান্স বার নিয়ে আদালতের সঙ্গে মহারাষ্ট্র সরকারের লড়াই অবশ্য আজকের নয়। ডান্স বার তুলে দিতে গত ১৫ বছর ধরেই মহারাষ্ট্রে সক্রিয় একের পর এক রাজ্য সরকার। ২০০৫ এই নিয়ে প্রথম সংশোধনী আনে মহারাষ্ট্র সরকার। এর আগেও ডান্স বার তুলে দিতে মহারাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্তকে বাতিল ঘোষণা করেছিল বম্বে হাইকোর্ট। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৩ সালে বম্বে হাইকোর্টের সেই রায়কেই মান্যতা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টও। এর পরই ২০১৬ সালে বিধানসভায় বিল এনে ডান্স বার বন্ধে আইন বানায় মহারাষ্ট্র সরকার। সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের রায়ের পরও সেই পথেই হাঁটতে চলেছে মহারাষ্ট্র সরকার, অর্ডিন্যান্স আনার সিদ্ধান্তে স্পষ্ট হল সেই ইঙ্গিতই।

আরও পড়ুন: কানহাইয়ারা নন, পাকপন্থী স্লোগান দেয় এবিভিপি-ই

মহারাষ্ট্র সরকারের বরাবরের বক্তব্য, এই ডান্সবারগুলি অশালীনতা ছড়ায় এবং প্রকারান্তরে যৌন ব্যবসাকেই মদত দেয়। অন্য দিকে রেস্তরাঁ এবং বার মালিক সংগঠনগুলির দাবি ছিল, বারগুলিকে নিষিদ্ধ করলে যৌন ব্যবসায় মদত দেওয়া তো কমবেই না, উল্টে বার নর্তকীদেরই পরোক্ষে যৌন পেশায় ঠেলে দেওয়া হবে। এক সময়, রাজ্য জুড়ে প্রায় সাতশো ডান্স বারে পঁচাত্তর হাজার মহিলা কাজ করতেন। মহারাষ্ট্র সরকার এই বারগুলি নিষিদ্ধ করায় সংসার চালাতে অনেকেই দেহ ব্যবসায়ে নেমেছেন বলে আদালতে জানিয়েছিলেন তাঁরা।

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন