মনোনয়ন পেশের শেষ দিন আগামিকাল। তার এক দিন আগে রাজ্যসভার ২৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল বিজেপি। আগামী দিনের ভোট অঙ্ক মাথায় রেখে সভাপতি অমিত শাহ তালিকায় ঠাঁই দিলেন নিজের ঘনিষ্ঠদেরও। তবে গুজরাতে হারের অভিজ্ঞতার পর বিরোধীদের সঙ্গে টক্করে গেলেন না। এ দিকে প্রতিকূলতার মধ্যেও বিভিন্ন রাজ্যে সমঝোতা করে অন্তত ১০টি আসন বার করে আনতে চাইছেন রাহুল গাঁধী। নতুন মুখ আনতে বাদ পড়লেন কংগ্রেসের অনেক প্রবীণ।
শিবসেনা ছেড়ে কংগ্রেসে যাওয়ার পর যে নারায়ণ রাণের দুর্নীতি নিয়ে রোজ সরব হত বিজেপি, আজ তাঁকেই দলের প্রার্থী করলেন অমিত। বসুন্ধরার সঙ্গে বিবাদের জেরে দল ছেড়ে যাওয়া কিরোরি লাল মীণাকে ফিরিয়ে এনে প্রার্থী করা হল রাজস্থানের দুর্বল মাঠে। রাজ্যের ১১ জেলায় ২৮ কেন্দ্রে তাঁর দাপট আছে। রাহুলের দল ঝাড়খণ্ড, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গে অন্য দলের সঙ্গে সমঝোতা করে মোট ১০ জনের নাম ঘোষণা করেছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সাহায্যে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির নাম আগেই ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু রাজীব শুক্ল, রেণুকা চৌধুরী, সত্যব্রত চতুর্বেদী, প্রমোদ তিওয়ারিদের মতো নেতারা নিশ্চিত আসন পাননি।
বিহারের ষষ্ঠ আসনে লড়াইয়ে মুখিয়ে আছেন অনেকে। অখিলেশ সিংহের মতো কাউকে প্রার্থী করে কংগ্রেস আসনটি পেতে চাইছে। জেডিইউ প্রার্থী করেছে মহেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ, বশিষ্ঠনায়ারণ সিংহকে। আরজেডি মনোজ ঝা, আশফক করিমকে। লক্ষ্যণীয় ভাবে আরজেডি থেকে জিতনরাম মাঁঝি বা শরদ যাদব প্রার্থী হলেন না। মাঁঝি সনিয়া গাঁধীর নৈশভোজে আসছেন মঙ্গলবার। মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বিজেপির প্রার্থী। ষষ্ঠ আসনে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। রাহুল ভরসা রাখছেন যুব, পেশাদার, আদিবাসী, ও অনুগামীদের উপরে। কংগ্রেস মহারাষ্ট্রে সাংবাদিক কুমার কেতকারকে প্রার্থী করায় বিতর্ক বেধেছে। কর্নাটক থেকে দীর্ঘদিনের নির্দল সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখরকে বিজেপি টিকিট দেওয়া নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। ভোটমুখী কর্নাটকে স্যাম পিত্রোদা নয়, মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশে ৩ কন্নড়কে টিকিট দিয়েছে কংগ্রেস।
গুজরাতে আহমেদ পটেলকে হারাতে না পারার অভিজ্ঞতা নিয়ে বিজেপি এ বারে খুব বেশি টক্করের পথে হাঁটেনি। লড়াই হবে এমন আসনে প্রার্থী দেয়নি। আগে বিজেপির দাবি ছিল, রাজ্যের ১০টি আসনের মধ্যে ৯টি অনায়াসে পাবে। কিন্তু সপার জয়া বচ্চন, আর সপা-কংগ্রেস সহযোগিতায় মায়াবতীর প্রার্থী ঘোষণার পর বিজেপি ৮টি আসনে প্রার্থী দিল। অমিত নিজের টিমের অনিল জৈন, জিভিএল নরসিংহ রাও, অনিল বালুনিদেরও প্রার্থী করলেন।
বেঙ্কাইয়া নায়ডু উপরাষ্ট্রপতি হওয়ায় এবং টিডিপির বিচ্ছেদ বার্তার পর অন্ধ্রে নতুন মুখ দরকার বিজেপির। জিভিএল সেই মুখ হতে পারেন। আবার ত্রিপুরা জয়ের পর কেরলকে গুরুত্ব দিতে সে রাজ্যে ভি মুরলীধরনকে মহারাষ্ট্র থেকে জিতিয়ে আনতে চায় বিজেপি। আগেই অরুণ জেটলি, প্রকাশ জাভড়েকর, ধর্মেন্দ্র প্রধান, জে পি নড্ডার মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। তবে এঁরা সকলেই জিতলেও তারা রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।