Mallikarjun Kharge

‘পদ্ম’কে রুখতে বিজেপির ধাঁচে সংগঠন চান খড়্গে

খড়্গের কড়া নির্দেশ, কংগ্রেস নেতাদের নিজের নিজের এলাকায় ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে হবে। সাংগঠনিক সম্পাদককে এ নিয়ে বৈঠক ডাকারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৮
Share:

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। —ফাইল চিত্র।

কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছেন তিনি। তাই দলীয় সংগঠনকে পদ্মশিবিরের মতো সাজাতে চান কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। দলের মরচে ধরা সংগঠনকে তৈলাক্ত করে নতুন সভাপতি কতখানি দৌড় করাতে পারবেন, তা নিয়ে অবশ্য কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

হায়দরাবাদে গত কাল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে আজ বসেছিল বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটি। সেখানে সব রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, মুখ্যমন্ত্রী, পরিষদীয় দলনেতারা যোগ দেন। বৈঠকের শেষে খড়্গের কড়া নির্দেশ, কংগ্রেস নেতাদের নিজের নিজের এলাকায় ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে হবে। সাংগঠনিক সম্পাদককে এ নিয়ে বৈঠক ডাকারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজেপি সভাপতি হওয়ার পরে গোটা দেশে বিজেপির সংগঠনে ‘পন্না প্রমুখ’ ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। তাতে ভোটার তালিকার এক একটি পৃষ্ঠায় থাকা ভোটাদাতাদের দায়িত্ব এক এক জন বিজেপি নেতার উপরে থাকত। কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছেন, তাঁদেরও একই ভাবে ভোটার তালিকা নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে। অনেক বিজেপি শাসিত রাজ্য, এমনকি কেরলেও দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস সমর্থকদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ চলে যাচ্ছে।

Advertisement

ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গান্ধী বলেছেন, বিজেপি বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করে আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করবে। সেই ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না। খড়্গের পরামর্শ, প্রচার কৌশলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মেকি ভাবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে, তা ভাঙতে হবে। মোদী সরকারকে নিশানা করতে হবে তথ্যের ভিত্তিতে। ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি ভোটারদের কাছে পৌঁছতে হবে। তৈরি করতে হবে তরুণ বক্তাদের বাহিনীও।

প্রদেশ সভাপতিদের কাছে আজ এক গুচ্ছ প্রশ্ন রাখেন খড়্গে। লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র ছ’মাস বাকি মনে করিয়ে দিয়ে তাঁর প্রশ্ন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের চিহ্নিত করার কাজ কি শুরু হয়েছে? ব্লক ও জেলা স্তরে কি গঠন করা হয়েছে কংগ্রেস কমিটি? কমিটি কি নিয়মিত মাঠে নামছে? খড়্গে বলেছেন, আগামী দু’তিন মাসে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। লোকসভা নির্বাচনের ছ’মাস বাকি। গত তিন মাসে তিনি ও রাহুল ২০টি রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে রণনীতি তৈরি করেছেন। এ বার প্রতিটি প্রদেশ নেতৃত্বকে নির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে হবে।

খড়্গের এই চাবুক হাতে সংগঠন চালানোর চেষ্টা দেখে প্রশ্ন উঠেছে, ক্যাডার ভিত্তিক দল বিজেপিতে যা সম্ভব, তা কি কংগ্রেসে করা যাবে? তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাহুল নিজেই গত কাল ওয়ার্কিং কমিটিরবৈঠকে বলেছেন, কংগ্রেস কোনও সংগঠন ভিত্তিক দল নয়। আন্দোলন নির্ভর দল, যার একটি সংগঠনও রয়েছে। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’রফলে সেই কংগ্রেস আবার সেই আন্দোলনে ফিরেছে বলেই মানুষের সাড়া মিলেছে। সংগঠনও চাঙ্গা হয়েছে। এই আন্দোলনে থাকতে গেলে কংগ্রেসের মতাদর্শ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকবে।

গত কাল বৈঠকে রাহুল বলেছিলেন, তিনি কংগ্রেস সভাপতিকে এক দিন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি কেন কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন? খড়্গে বলেছিলেন, ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে খড়্গে যখন কংগ্রেসে যোগ দেন, তখন অধিকাংশ কংগ্রেস নেতা ইন্দিরা গান্ধীরবিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে কংগ্রেস(ও) গঠন করেছেন। কিন্তু খড়্গের মনেহয়েছিল, কংগ্রেসই এক মাত্র দরিদ্র, অনগ্রসর, শোষিতের সমস্যার কথা তুলে ধরতে পারে। কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘এইগল্প বলে রাহুল গান্ধী আসলে আমাদের প্রশ্ন করেছেন, আমাদের মধ্যে এই মতাদর্শগত স্পষ্ট ধারণা আছে কি না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন