মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সুষমা স্বরাজ
সম্প্রতি কলকাতায় বিক্ষোভ দেখিয়ে শেখ হাসিনার কুশপুতুল পুড়িয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাতে বেজায় ক্ষুদ্ধ হয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে শনিবার চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করেন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ যে ভাবে সে দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছিল, তা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে মোটেই মজবুত করবে না। কেন্দ্র যদি সত্যিই ঢাকাকে পাশে পেতে চায়, তা হলে সঙ্ঘ পরিবারের এ হেন জঙ্গিপনা বন্ধ করার ব্যবস্থা করুক। চিঠিতে তিনি প্রশ্ন তোলেন, পরিষদ যে আচরণ করেছে তার।
পরে কী করে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হবে?
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি বলে হেনস্থা, ক্ষোভ জাভেদের গ্রামে
গত ১ জুলাই পার্ক সার্কাসে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর পর পর আক্রমণের বিহিত চেয়েই সে দিন বিক্ষোভ হয় বলে পরিষদ দাবি করেছে। তাদের বক্তব্য, শেখ হাসিনা ভারতবাসীর পছন্দের নেত্রী। কিন্তু যে ভাবে তাঁর আমলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে তা নিন্দনীয়। বাংলাদেশ সরকার যাতে সে দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন, সেই দাবিতেই বিক্ষোভ হয়েছিল। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র সৌরীশ মুখোপাধ্যায় জানান, এই বিক্ষোভে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে বলে তাঁরা মনে করেন না।
মমতা প্রশাসন অবশ্য মনে করে, কোনও বন্ধু দেশের প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো মোটেই ভালো কাজ নয়। যখন এক দিকে চিন এবং অন্য দিকে পাকিস্তান ভারতকে বিব্রত করছে, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে এমন আচরণ মানা যায় না। অতীতে অবশ্য তিস্তার জল বণ্টনের প্রশ্নে রাজ্যের স্বার্থকেই সর্বাগ্রে রেখেছিলেন মমতা। উত্তরবঙ্গকে শুখা রেখে তিনি বাংলাদেশকে জল দিতে রাজি হননি। পাংশায় গ্যাঞ্জেস বাঁধ প্রকল্পও মমতা বাধায় স্থগিত হয়ে গিয়েছে। উল্টে আত্রেয়ী নদীতে বাঁধ দেওয়ার জন্য ঢাকার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে নবান্ন। সেই প্রেক্ষাপটে হাসিনা-মমতা সম্পর্ক নিয়েও নানা প্রশ্ন প্রশাসনের চর্চার বিষয়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই জানিয়েছেন, হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তাঁর কোনও দিনই খারাপ নয়। পাশাপাশি রাজ্যের স্বার্থও তিনি ক্ষুণ্ণ হতে দেবেন না। সেই কারণেই বিদেশমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।