National News

স্ত্রীকে বাঁচাতে ২৫ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রির চেষ্টা!

উত্তরপ্রদেশের কনৌজের বাসিন্দা অরবিন্দ। হতদরিদ্র। পরিবার বলতেস্ত্রী, বছর চারেকর একটি মেয়ে এবং এক বছরের একটি ছেলে। স্ত্রী সুখদেবী গর্ভবতী। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান অরবিন্দ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কনৌজ শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ১২:২৩
Share:

খবর পেয়েই হাসপাতালে পৌঁছয় পুলিশ। ছবি সৌজন্য: এএনআই টুইটার।

হাসপাতালে হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন অরবিন্দ বানজারা। চোখেমুখে একটা চাপা টেনশন আর ভয়ের ছাপ স্পষ্ট. তার হাত ধরেই পাশে পাশে হাঁটছিল বছর চারেকের একটি মেয়ে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সবে মাত্র শিশুটিকে বিক্রি করতে যাবেন, সেই সময়ই পুলিশ হাজির সেখানে। পুলিশকে দেখেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন অরবিন্দ।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের কনৌজের বাসিন্দা অরবিন্দ। হতদরিদ্র। পরিবার বলতেস্ত্রী, বছর চারেকর একটি মেয়ে এবং এক বছরের একটি ছেলে। স্ত্রী সুখদেবী গর্ভবতী। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান অরবিন্দ। চিকিৎসক সুখদেবীর অবস্থা খতিয়ে দেখে বলেছিলেন ওঁকে বাঁচাতে হলে এখনই রক্ত দিতে হবে। পকেটে কানাকড়িও ছিল না অরবিন্দের। চিকিৎসকের পরামর্শ শোনার পরই তাঁর পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে যায়। কিন্তু স্ত্রীকে তো বাঁচাতেই হবে। তবে সেই মুহূর্তে রক্ত জোগাড়ের ভাবনাটাই যেন বেশি ঘিরে ধরেছিল তাঁকে।

কোথা থেকে রক্ত জোগাড় করবেন ভাবতে ভাবতে তিনি হাসপাতালের এ প্রান্ত ও প্রান্ত ছুটে বেড়ান। যদি কোনও ভাবে রক্ত জোগাড় হয়ে যায়! না, ভাগ্য সদয় হয়নি অরবিন্দের। শেষমেশ অন্য একটা উপায়ও বের করে ফেললেন। যে উপায়টা তিনি বের করেছিলেন, পুলিশের জেরার মুখে অরবিন্দ জানিয়েছিলেন এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীকে বাঁচানোর আর কোনও পথ ছিল না।অরবিন্দের সঙ্গেই ছিল তাঁর বছর চারেকের মেয়ে রোশনি। স্থির করে নিয়েছিলেন মেয়েকে বিক্রি করে দেবেন। রফাও হয়ে গিয়েছিল ২৫ হাজার টাকায়। কিন্তু শেষমেশ তাঁর সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায় সময়মতো পুলিশ হাজির হওয়াতে। অরবিন্দ এমন একটা কাণ্ড ঘটাতে চলেছেন আঁচ পেয়েই হাসপাতাল চত্বর থেকে কেউ একজন পুলিশকে খবর দেন।পুলিশ হাতেনাতে ধরে ফেলতেই ভেঙে পড়েন অরবিন্দ। কেন মেয়েকে বিক্রি করার উপায় বেছে নিতে হল তাঁকে গোটা ঘটনাটি পুলিশকে জানান অরবিন্দ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ব্যর্থতা ঢাকতেই দেশের নজর ঘোরানোর ছক মোদীর

ঘটনাটা শোনার পর পুলিশও স্তম্ভিত হয়ে যায়। না, গ্রেফতার করেনি অরবিন্দকে। উল্টে তাঁকে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

তিরওয়া থানার পুলিশ আধিকারিক আমোদ কুমার সিংহ বলেন, “স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি চিকিৎসার জন্যএক দম্পতির টাকা প্রয়োজন। খুব বিপর্যস্ত সেই পরিবার। এটাও জানতে পারি, চিকিৎসার টাকা জোগাতে নিজেদের সন্তানকে বিক্রি করার চেষ্টা করছে।” তিনি আরও জানান, বিষয়টি জানার পরই তদন্তে নামে পুলিশ। জানতে পারা যায়, ওই ব্যক্তির স্ত্রী খুবই অসুস্থ, রক্তের প্রয়োজন। আর দেরি না করে তখনই তিরওয়া থানা ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। সিংহ বলেন, “আমরা ওই মহিলার যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নিয়েছি। প্রয়োজনে রক্তও দেব।”

আরও পড়ুন: মোষচোর সন্দেহে গণপিটুনি, নিহত যুবক

কেন সন্তানকে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন?

অরবিন্দ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, জেলা হাসপাতাল থেকে যখন বলা হল রক্ত না দিলে স্ত্রীকে বাঁচানো যাবে না, তখন দিগ্বিদিক শূন্য হয়েই মেয়েকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।সুখদেবা বলেন, “নিজের সন্তানকে বিক্রি করা সহজ কাজ নয়। কিন্তু আমাদের অন্য কোনও পথ খোলা ছিল না।”

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন