Arrest From Ranchi Hotel

এসএসসির প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে আইএসের জন্য বোমা বানাতেন! রাঁচীর হোটেল বসে সন্ত্রাসবাদী নিয়োগ! বিস্ফোরক-সহ ধৃত

পুলিশ বলছে, হোটেলের ঘরে বোমা তৈরি করে সুবর্ণরেখার জলে দানিশেরা সেগুলো পরীক্ষা করতেন। শুধু বিস্ফোরক তৈরিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না তাঁদের কাজ। নিয়োগও হত হোটেল থেকেই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০৩
Share:

হোটেলের এই ঘরে বসে বোমা বানাতেন এক এসএসসি পরীক্ষার্থী! ছবি: সংগৃহীত।

নামে হোটেল। আদতে সরু রাস্তার মধ্যে জরাজীর্ণ একটি বাড়ি। ছোট ছোট কয়েকটি ঘর। দেওয়ালের রং ফ্যাকাসে। নড়বড়ে দরজা। ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর ইসলামনগরের উপর ওই ভাঙাচোরা লজ থেকে উদ্ধার হল বিপুল বিস্ফোরক। মিলল অস্ত্রশস্ত্র। ঘরটিতে থাকতেন আশহর দানিশ নামে এক যুবক। অভিযোগ, এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতির নাম করে লজে থেকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর জন্য বোমা বানাতেন তিনি।

Advertisement

সম্প্রতি একটি জঙ্গি মডিউলের খোঁজ পায় দিল্লি পুলিশ। জানা যায়, অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়নগরে ওই জঙ্গি মডিউলের আস্তানা। তার মধ্যে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু, ঝাড়খণ্ড, বিহার, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লিতে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে যেমন অস্ত্র এবং রাসায়নিক বোমা তৈরির উপকরণ মিলেছে, তেমনই পাওয়া গিয়েছে বেশ কিছু ডিজিটাল ডিভাইস এবং নথিও। পাশাপাশি, কয়েক দিন আগে জঙ্গি সন্দেহে আফতাব কুরেশি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য পান তদন্তকারীরা। মেলে দানিশের নাম। তার পর দিল্লি পুলিশ এবং ঝাড়খণ্ডের অ্যান্টি-টেরোরিজ়ম স্কোয়াড যৌথ অভিযানে রাঁচীর হোটেল থেকে দানিশ-সহ অন্তত ১২ জন গ্রেফতার হন। ভাঙাচোরা, জীর্ণ হোটেলের ১৫ নম্বর ঘর থেকে বোমা তৈরির প্রচুর মশলা উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, পটাশিয়াম নাইট্রেট থেকে সাদা ক্রিস্টালিন পাউডার ছিল ওই ঘরে। তা ছাড়াও আরও অনেক মশলাপাতি এবং দেশি বন্দুক পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ বলছে, হোটেলের ঘরে বোমা তৈরি করে সুবর্ণরেখার জলে দানিশেরা সেগুলো পরীক্ষা করতেন। সরকারি পরীক্ষার জন্য যে যুবক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তিনি কী ভাবে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

তবে কেবল বিস্ফোরক তৈরিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না দানিশদের কাজ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, রাঁচীর হোটেলটির ১৫ নম্বর ঘর ছিল সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ‘নিয়োগকেন্দ্র।’ দানিশ নিজেও সমাজমাধ্যমে পরিচালিত এক পাকিস্তানি হ্যান্ডলারের মাধ্যমে আইএসের কাজে যুক্ত হন। তিনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে নিতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কাজে হাতেখড়ি হয়। ওই যুবকের ঠিকানা, আত্মীয়-স্বজন সম্পর্কে খোঁজখবর করছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, হোটেলের ১৫ নম্বর ঘরের সামনে সর্বদা কয়েক জোড়া চটি থাকত। অচেনা মুখের আনাগোনা ছিল। বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মের শলাপরামর্শ হত। সম্প্রতি কয়েক জন বিজেপি নেতার উপর হামলার ছক কষছিলেন দানিশেরা। তবে বিভিন্ন কারণে সেই পরিকল্পনা পিছিয়ে দেন।

জানা গিয়েছে, দানিশেরা বোমা তৈরির উপকরণের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতেন। এমনকি, অ্যামাজনে ছুরি ও রাসায়নিক বরাত দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। দানিশদের মডিউলের অন্যান্য সদস্য হলেন সুফিয়ান খান, মহম্মদ ইয়ামান, কামরান কুরেশি। ঝাড়খণ্ড-সহ নানা রাজ্যের ধর্মস্থানগুলিতে হামলার পরিকল্পনা ছিল এঁদের। ধৃত সকলকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টায় তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement