রাজধানীতে ফের দুষ্কৃতী-হামলায় মৃত্যু হল উত্তর-পূর্বের এক যুবকের। গত রাতে দক্ষিণ দিল্লির কোটলা-মুবারকপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেছেন, “পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। কোনও প্ররোচনা ছাড়াই ওই যুবককে আক্রমণ করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও এ নিয়ে তদন্ত করবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম সালোনি। বছর তিরিশের ওই নাগা যুবক থাকতেন দিল্লির মুনিরকা এলাকায়। তিনি কল-সেন্টারে চাকরি করতেন। কয়েক দিন আগেই তিনি কাজ ছেড়ে দেন। আদতে মণিপুরের বাসিন্দা সালোনির পরিজনরা এখন থাকেন অসমের সেনাপতি জেলার তনজয় গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গত রাতে আড়াইটে নাগাদ এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ফিরছিলেন সালোনি। তাঁর সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন। এক জন মণিপুরেরই। অন্য জন বিহারের বাসিন্দা। গুরুদ্বার রোডে একটি সাদা গাড়িতে এসে ৫-৬ জন দুষ্কৃতী তাঁদের পথ আটকায়। এরা মদ্যপ ছিল বলে অভিযোগ। তিন যুবকের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের ঝামেলা বাধে। আচমকা সালোনিকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে তারা। ভয় পেয়ে অন্য দুই যুবক সেখান থেকে পালান। তাঁদেরই এক জন ফোনে পুলিশে খবর দেন। কিছু ক্ষণ পর ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় সালোনিকে উদ্ধার করে এইমসে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের কাছে থাকা একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ‘ফুটেজ’ সংগ্রহ করা হয়েছে। সূত্রের খোঁজে সালোনির ফোনের কল-রেকর্ড খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের জন্য কয়েকটি দল গঠন করেছে পুলিশ। তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রুজু করা হয়েছে খুনের মামলা। ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে দেহটি।
এ বছর জানুয়ারি মাসে দিল্লির লাজপত নগর বাজারে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় অরুণাচলের তরুণ নিদো টানিয়ার। গত রাতের ঘটনা ঘটে সেই লাজপত নগরের কাছে কোটলা-মুবারকপুরে। নিদোর মতো এই ক্ষেত্রেও বিদ্বেষজনিত কারণেই হত্যা কি না, সেই বিতর্ক উঠছে। নিদোর হত্যাকাণ্ডের জেরে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। কিন্তু তার পরও রাজধানীতে উত্তর-পূর্বের বাসিন্দাদের উপরে নিগ্রহ বন্ধ হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে মুনিরকা এলাকায় ১৪ বছরের এক মণিপুরী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তার পরের মাসেই উত্তর-পূর্বের দুই তরুণীর শ্লীলতাহানি করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। চলতি মাসের শুরুতেও চিরাগ দিল্লি এলাকায় একটি নর্দমায় এক মণিপুরী যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।