পলামুর জঙ্গি নিধনের প্রেক্ষিতে ৭২ ঘন্টার বন্ধের ডাক দিল মাওবাদীরা। আজ সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, ১২ থেকে ১৪ জুন, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীস্গঢ়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার জুড়ে এই বন্ধ পালিত হবে।
এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, এই বন্ধ প্রত্যাশিতই ছিল। সেই কারণে আগে থেকেই মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলিতে আগে থেকেই অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আজ জারি করা হয়েছে চরম সতর্কতা। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। বন্ধে মাওবাদীদের সহজ লক্ষ্য সাধারণ ভাবে রেল লাইন ও ট্রেন। যে কারণে রেল কর্তাদেরও পুলিশ বাড়তি সতর্ক করে দিয়েছে। রেল লাইনে নাশকতা রুখতে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে।
পলামুর জঙ্গলে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত তিন কিশোরের পরিচয় এখনও অজ্ঞাত। জেলার এসপি ময়ূর পটেল জানিয়েছেন, ওই তিন জনের কোনও আত্মীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ৭২ ঘণ্টা পরও কেউ না এলে, নিয়ম মেনে ওই দেহগুলি কবর দেওয়া হবে। শনাক্তকরণের জন্য আরও কয়েক দিন কেন অপেক্ষা করা হবে না? পলামুর ডেপুটি কমিশনার কে শ্রীবাসনের জবাব, ‘‘শবদেহ দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করে রাখার মতো পরিকাঠামো জেলায় নেই। তাই নিয়ম অনুযায়ী ৭২ ঘন্টার পরই ওই সেগুলি কবর দেওয়া হবে।’’
এ দিকে গত কাল দুপুরে ফের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষ হয়। চৈনপুর থানার কটকথি গ্রামের একটি পরিত্যক্ত স্কুলবাড়ির সামনে ঘটনাটি ঘটে। পরে, তল্লাশি চালিয়ে তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। তবে, ২০ জন মাওবাদী পালায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে এক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে মাও-সংগঠনের সাব-জোনাল কম্যান্ডার অরবিন্দজি ওরফে প্রসাদ লকড়া। তার মাথার উপর ১০ লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষমা করা হয়েছিল। চৈনপুর থানা ও ব্লক অফিসে হামলা এবং পাঁচ পুলিশকর্মীকে খুনের অভিযোগ ছিল অরবিন্দ বোমা মারা সহ বেশ কিছু ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল অরবিন্দজি।
পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল চৈনপুরের ওই সংঘর্ষে ক্রিস্টোফার গিড় (৪০) নামে গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারকে অর্থসাহায্য ও তাঁর পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। এডিজি (অপারেশন) স্থ্য়নারায়ণ পাণ্ডে বলেন, ‘‘জঙ্গিদের গুলিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পরিজনদের ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও এক নিকটাত্মীয়কে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।’’