ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী দমন অভিযান। —ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হল দুই মাওবাদী নেতার। দু’জনের মাথায় দাম ছিল ৩৫ লক্ষ টাকা। ছত্তীসগঢ়ের মোহলা-মানপুর-অম্বাগড় চৌকি জেলার মদনওয়াড়া জঙ্গলে মাওবাদীরা লুকিয়ে রয়েছে বলে গোপন সূত্রে খবর পায় নিরাপত্তা বাহনী। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই বুধবার রাতে জঙ্গল এলাকায় অভিযান চালায় যৌথবাহিনী।
ছত্তীসগঢ় পুলিশের ‘ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড’ (ডিআরজি) এবং আধাসেনা বাহিনী ‘ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ’ (আইটিবিপি) যৌথ ভাবে হানা দেয় জঙ্গলে। মদনওয়াড়ার এই জঙ্গলটি ছত্তীসগঢ়ের কাঁকের জেলা লাগোয়া। প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রশস্ত্র লুকানোর জন্য এই জঙ্গলকে ব্যবহার করে মাওবাদীরা। বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে খবর যায়, জঙ্গলের ভিতরে বেশ কয়েকজন মাওবাদী নেতা জড়ো হয়েছেন। সেই মতো জঙ্গলে হানা দিতেই মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয়। তাতে মৃত্যু হয় মাওবাদী নেতা বিজয় রেড্ডি এবং লোকেশ সালামের। বিজয় ছিলেন মাওবাদীদের দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জ়োনাল কমিটির সদস্য। তাঁর মাথার দাম ছিল ২৫ লক্ষ টাকা। লোকেশও মাওবাদীদের একটি আঞ্চলিক কমিটির সদস্য। তাঁরও মাথার দাম ছিল ১০ লক্ষ টাকা।
একদা অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা বিজয় বিগত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছত্তীসগঢ়ের রাজনন্দগাঁও-কাঁকের সীমানা এলাকায় সক্রিয় ছিলেন। লোকেশ অতীতে আত্মসমর্পণ করলেও গোপনে মাওবাদীদের কোটরি অঞ্চল কমিটির হয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন বলে সন্দেহ পুলিশের। বুধবার সূর্য ডোবার পর থেকেই ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গলে মাওবাদীদের খোঁজে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। ভারী বৃষ্টি এবং মাওবাদীদের গুলিবর্ষণের ফলে অভিযানে কিছু বেগ পেতে হয় যৌথবাহিনীকে। পরে সংঘর্ষ থামলে দুই মাওবাদী নেতার দেহ উদ্ধার করা হয়।
যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের ফলে মাওবাদী কার্যকলাপ এখন অনেকটাই কমে এসেছে। গত বছর ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের সাতটি জেলায় মোট ৭৯২ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেন বলে জানিয়েছে ছত্তীসগঢ় পুলিশ। এ বছর ইতিমধ্যেই সে সংখ্যা ছাপিয়ে যেতে চলেছে। পাশাপাশি, যৌথবাহিনীর অভিযানে সিপিআই (মাওবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু, পলিটব্যুরো সদস্য চলপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নর সিংহচলম ওরফে সুধাকরের মতো শীর্ষস্থানীয় নেতার মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে একদা ‘রেড করিডর’ বস্তারে ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে মাওবাদীরা। তবে এখনও ছত্তীসগঢ়ের কিছু কিছু এলাকায় মাওবাদী গতিবিধি ধরা পড়ছে।