ফাইল চিত্র।
জাল নোট ছড়াতে মাওবাদীদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে ভিন্দেশি গুপ্তচর সংস্থা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) সম্প্রতি এমনই একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। সম্প্রতি বিহার ও ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জেলা থেকে জালনোট-সহ কয়েকজন মাওবাদী কম্যান্ডার ও লিঙ্কম্যান গ্রেফতার হওয়ার পরে স্থানীয় পুলিশের পাশপাশি তাদের জেরা করেছেন আইবি কর্তারা। এর পরেই জাল নোট ছড়ানোর এই নেটওয়ার্ক সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে আইবি।
পটনা স্টেশন লাগোয়া মহাবীর মন্দিরের পাশ থেকে দিন চারেক আগে চার লক্ষ টাকার জাল নোট-সহ ধরা পড়ে মধুরেন্দ্র কুমার। গয়া এবং অরঙ্গাবাদ জেলায় তার বিরুদ্ধে নাশকতার কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৭ সালে বেশ কয়েক মাস সে জেলেও ছিল। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই গায়েব হয়ে যায় সে। তার ভাই, মাওবাদী কম্যান্ডার দীনেশ ছত্তীসগঢ়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যায়। সেই মধুরেন্দ্র পটনায় আসার পরেই পুলিশের নজরে পড়ে। পরে তাকে জাল নোট-সহ গ্রেফতার করা হয়।
মধুরেন্দ্রকে জেরা করেন পটনার এসএসপি মনু মহারাজ-সহ রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। তার কাছ থেকেই প্রথম এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পান তাঁরা। মাওবাদী প্রভাবিত অরঙ্গাবাদের বাসিন্দা অনুজ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে দু’হাজার টাকার নোটে চার লক্ষ টাকা পেয়েছিল ওই মাওবাদী লিঙ্কম্যান। প্রায় দেড় বছর ধরে অনুজের সঙ্গে যোগাযোগ তার। মধুরেন্দ্র পুলিশকে জানিয়েছে, অনুজকে ওই টাকা দেয় স্থানীয় শিক্ষক বীরেন্দ্র সিংহ। বীরেন্দ্রের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। বীরেন্দ্র এবং অনুজের কাছে জালনোটের ‘খেপ’ আসে বলেও জানায় সে। বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে তা বাজারে ছাড়া হচ্ছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
বিহারের মুজফফরপুর, ভাগলপুর এবং ঝাড়খণ্ডের বোকারো এবং গিরিডিতেও মাওবাদী লিঙ্কম্যানদের কাছ থেকে জালনোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই জালনোটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন এজেন্সিকে নিয়ে এফআইসিএন কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ওই গ্রুপেই এই রিপোর্ট শেয়ার করা হয়েছে। কোঅর্ডিনেশন গ্রুপের নোডাল এজেন্সি এনআইএ। এই গ্রুপের একটি বিশেষ সেল তৈরি করে প্রতিটি কেস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পটনা পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, শীঘ্রই এনআইএর হাতেই এ ধরনের সব কেস তুলে দেওয়া হবে।