প্রতীকী ছবি।
ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে মাওবাদীরা। গত এপ্রিলে ছত্তীসগঢ়ের সুকমায় হামলা চালিয়ে প্রায় তিরিশ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে খুন করেছিল তারা। সেই কথা মাথায় রেখে ওই রাজ্যে মাওবাদী দমন কৌশল পরিবর্তনের কথা ভাবছে কেন্দ্র। তারই মধ্যে মঙ্গলবার রাতে বিহারের এক রেল স্টেশনে নতুন করে হামলা হয়ে গেল। দুই রেলকর্মীকে অপহরণ করে ১৬ ঘণ্টা আটকে রাখল মাওবাদীরা। শেষ অবধি তাঁরা অবশ্য অক্ষত অবস্থাতেই ফিরে এসেছেন।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’ এবং ‘মিশন ২০১৭’ অভিযানে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ করছে বাহিনী। তার জেরে অনেকটাই কোণঠাসা মাওবাদী জঙ্গিরা। অভিযান বন্ধের দাবিতে তারা ২০ ডিসেম্বর বিহার ও ঝাড়খণ্ড বন্ধের ডাক দিয়েছিল। বন্ধ সফল করতেই লখিসরাই জেলার মসুদন হল্ট স্টেশনে হামলা চালানো হয় বলে মনে করা হচ্ছে। বিহার-ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক বছরে মাওবাদী হামলা অনেকটাই কমেছে। এ বছর মে মাসে ঝাড়খণ্ডে আত্মসমর্পণ করেন মাওবাদী নেতা কুন্দন পাহান। ক’দিন আগেই ফের ধরা হয়েছে তাদের আর এক নেতা কোবাড ঘান্দিকে। ছত্তীসগঢ়েই বরং বড় মাপের হামলা এখনও ঘটছে। কিন্তু বিহারে নতুন করে মাওবাদী সক্রিয়তা বুঝিয়ে দিল, নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় এখনও আসেনি।
গত কাল রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ৮-১০ জন সশস্ত্র জঙ্গি হল্ট স্টেশনটিতে হামলা চালায়। স্টেশনের লাগোয়া রেলের সিগন্যালিং প্যানেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। সহকারী স্টেশনমাস্টার মুকেশ কুমার এবং কুলি নীরেন্দ্র মণ্ডলকে তুলে নিয়ে যায়। এর মিনিট দশেক পরে ওই স্টেশনে আসে গয়া-জামালপুর প্যাসেঞ্জার। সিগন্যাল না থাকায় ভোর পৌনে ছ’টা পর্যন্ত ট্রেনটি স্টেশনে আটকে থাকে।
আরও পড়ুন: দূষণে দিল্লিকে টপকাল কলকাতা! মানতে নারাজ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় পর্ষদ
সকাল সাতটা নাগাদ মুকেশ কুমারের মোবাইল ফোন থেকে মালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে ফোন করা হয়। মাওবাদীরা হুমকি দেয়, ওই রুটে ফের ট্রেন চললে অপহৃতদের খুন করা হবে। ফলে ফের ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
দিনভর আশঙ্কার পর বিকেলে অবশ্য দুই রেলকর্মী ফিরে আসেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিশাল বাহিনী অপহৃতদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছিল। সে কথা জানতে পেরে তাঁদের স্থানীয় একটি জঙ্গলে ছেড়ে পালায় মাওবাদীরা।
গত কাল রাতেই লখিসরাই জেলার চানন থানা এলাকায় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বীরেন্দ্র কোড়াকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। অভিযোগের তির মাওবাদীদের দিকেই।