অতুল বি টাপকির। ছবি: ফেসবুক।
একরাশ স্বপ্ন ছিল চোখে। ভাল ছবি তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার জেদটা দিনের পর দিন চেপে বসেছিল। সেই মতো পরিচালক থেকে অভিনেতা, চিত্রনাট্যকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু। সব ঠিকঠাক। মরাঠি ছবিতেই প্রযোজনা করবেন বলে সিদ্ধান্তটাও নিয়ে ফেললেন। ছবির প্লট রাজনীতিনির্ভর। পরিচালক অঙ্কুর কাকাতকর। অভিনয়ে জিতেন্দ্র জোশী এবং হৃষিতা ভট্ট। শুটিং থেকে পোস্ট এডিট সমস্তই হল নির্বিঘ্নে। ছবি মুক্তির আগে চাপা উত্তেজনা তো ছিলই। ছবিটা ভাল মতো ব্যবসা করবে তো?
আরও পড়ুন: মডেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু, যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন
অবশেষে মুক্তি পেল ছবি। নাম ‘ঢোল তাশে’। সমালোচকদের প্রশংসা কুড়োলেও দিন যত এগোল, হলে দর্শকদের উপস্থিতির হার ক্রমশই ফিকে হয়ে যেতে লাগল। বক্স অফিসে তেমন ভাবে সাড়াই ফেলতে পারেনি ওই ছবি। দিনের পর দিন ঋণে বোঝা চেপে বসতে থাকল তরুণ প্রযোজকের ঘাড়ে। পাওনাদারদের তাগাদাও বাড়তে লাগল। ক্রমশ অবসাদ ঘিরে ধরছিল তাঁকে। আর তা নিয়ে অশান্তিও শুর হল সংসারে। ছবি ফ্লপ হওয়ায় অর্থাভাব বাড়তে শুরু করলে নিজের ঘরেও যেন কদর কমতে শুরু করে তাঁর। ক্রমশ স্ত্রীর গঞ্জনা শুনতে শুনতে মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। অবস্থা এতটাই বিগড়ে যায় যে তাঁর স্ত্রী এবং শ্যালক তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করতে শুরু করেছিলেন। তাই সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলেন। নিজেকে শেষ করার চরম সিদ্ধান্ত! এ সমস্ত অভিযোগ নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে পোস্ট করে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলেন মরাঠি ছবির প্রযোজক অতুল বি টাপকির।
রবিবার পুণের একটি হোটেল থেকে টাপকিরের মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। পুলিশের ধারণা আত্মহত্যাই করেছেন এই তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা। কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া না গেলেও মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে নিজের ফেসবুক পেজে টাপকির যে পোস্ট করেছিলেন তা থেকেই তাঁর আত্মহত্যার কারণ জানা সম্ভব বলে মনে করছে পুলিশ।
পুণের ব্যস্ত রাস্তা কারভে রোডের একটি হোটেলে গত কয়েক দিন ধরে ছিলেন তিনি। রবিবার সকালে হোটেলকর্মীরা তাঁকে ডাকাডাকি করলে দরজা খোলেননি তিনি। হোটেল কর্তৃপক্ষ তখন পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। ঘরের ভিতর থেকে টাপকিরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন টাপকির। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর দেহ সাসুন জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।