আজ শুনানি সুপ্রিম কোর্টে

ব্যাঙ্কে আধার যোগের সময় বেড়ে ৩১ মার্চ

গত সপ্তাহেই প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার জোড়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ মার্চ করা হয়েছিল। তখন যদিও অন্য ক্ষেত্রগুলি নিয়ে মোদী সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রিম কোর্টে শুনানির ঠিক এক দিন আগেই কিছুটা পিছু হটে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গেও আধার যোগের সময়সীমা বাড়িয়ে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরই শেষ দিন নয়, বরং আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সংযোগের সুযোগ মিলবে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে আজ এ কথা জানানো হয়েছে।

Advertisement

গত সপ্তাহেই প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার জোড়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ মার্চ করা হয়েছিল। তখন যদিও অন্য ক্ষেত্রগুলি নিয়ে মোদী সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। তবে বুধবারই আধার নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্র। ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট, ২০০২’ অনুযায়ী— ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সঙ্গে আধার যোগ বাধ্যতামূলক। এ জন্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজকের সরকারি নির্দেশিকায় প্রথমে এই সীমা অনির্দিষ্টকালের জন্য করে দেওয়া হয়। এর পরে আলাদা বিবৃতি দিয়ে সরকার জানায়, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও নির্দিষ্ট কিছু আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে আধার যোগের সময়সীমা ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ করা হয়েছে। সব রকমের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ৫০ হাজার টাকা ও তার বেশি লেনদেনে আধার জানানো বাধ্যতামূলক করেছে সরকার।

ব্যাঙ্ক, মোবাইল ছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আধার জোড়া নিয়ে মোদী সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে। মামলাকারীদের মতে, এই সব প্রকল্পে আধার যোগকে বাধ্যতামূলক করার কোনও প্রয়োজনই নেই। পাশাপাশি, আধারের বায়োমেট্রিক ডেটার অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে বলেই আশঙ্কা করেছেন তাঁরা। আধারের মাধ্যমে নাগরিকদের গোপনীয়তার বিষয়টিতেও ধাক্কা আসবে বলে মনে করেন মামলাকারীরা। এই পরিস্থিতিতে আগামী কাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের শুনানির দিকে তাকিয়ে সব মহল। এর আগে শীর্ষ আদালত ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। ফলে সেই রায়ের প্রভাব আধার মামলায় পড়ে কিনা, সেটাও দেখার।

Advertisement

বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে আধার জুড়তে শুরু থেকেই তৎপর মোদী সরকার। রাজনৈতিক মহলের প্রবল আপত্তিতেও পিছু হটেনি কেন্দ্র। কোর্টে সরকার যুক্তি দিয়ে এসেছে, যে হেতু দেশের অধিকাংশ মানুষের আধার কার্ড হয়ে গিয়েছে, তাই বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে আধার জুড়তে কোনও অসুবিধা নেই। প্রকল্পের সঙ্গে আধার জুড়লে সুবিধাভোগীকে চিহ্নিত করা সম্ভব। সরকারি অর্থের অপব্যবহারও আটকানো যেতে পারে। কিন্তু মোবাইলের মতো ব্যাপারে এই যুক্তি আদৌ খাটে কিনা, সে প্রশ্নও উঠেছে। তা ছাড়া, আধার নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে সামাজিক স্বার্থে চলা মিড-ডে মিলের মতো প্রকল্পগুলি ধাক্কা খেতে পারে বলেই পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন বিরোধীরা।

এখন সুপ্রিম কোর্টের উপরেই নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের প্রকল্প আধারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন