—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) করে বহু ভোটারের নাম বাদ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এমনই অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। এসআইআর নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ুর মামলায় এ বার হলফনামা দিয়ে সেই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিল কমিশন। তাদের বক্তব্য, বিপুল সংখ্যক বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ ‘অতিরঞ্জিত’। কমিশন আরও জানিয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এই ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে। বিষয়টি অনুমান ছাড়া আর কিছুই নয়।
পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ুর এসআইআর প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল, ডিএমকে, সিপিএম, বাংলার কংগ্রেস শিবির। সেই আবেদনের ভিত্তিতে কমিশনের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। সেই মামলায় পৃথক হলফনামা দাখিল করে এসআইআর প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলি খারিজ করার আবেদন জানান কমিশনের সচিব পবন দিওয়ান।
গত ২৬ নভেম্বর তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন এবং অন্যদের দাখিল করা আবেদনে ৮১ পাতার হলফনামা দিয়েছে কমিশন। তারা জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ ‘রাজনৈতিক স্বার্থপূরণের উদ্দেশ্যেই’। হলফনামায় কমিশন আরও উল্লেখ করে, এসআইআর কোনও নতুন প্রক্রিয়া নয়। ভোটার তালিকায় যাতে কোনও সমস্যা না-থাকে তা দেখার দায়িত্ব কমিশনেরই। বহু বছর ধরেই এই প্রক্রিয়া চলছে। ভারতের সংবিধানও কমিশনকে সেই অধিকার দেয়।
হলফনামায় পশ্চিমবঙ্গের নাম আলাদা করে উল্লেখ করেছে কমিশন। তারা জানিয়েছে, বাংলায় ইতিমধ্যে ৯৯.৭৭ শতাংশ ভোটারের কাছে এনুমারেশন ফর্ম পৌঁছে গিয়েছে। তার মধ্যে ৭০.১৪ শতাংশ ফর্ম পূরণের পর ফেরতও চলে এসেছে। বুথ লেভেল আধিকারিকেরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করছেন। তার পর ফর্ম পূরণের পর তা সংগ্রহ করে কমিশনের কাছে পাঠাচ্ছেন। যদি বাড়িতে কেউ না-থাকেন তবে অন্তত তিন বার সেখানে যাচ্ছেন বিএলও-রা। কমিশন জোর দিয়েছে, কোনও বৈধ ভোটারের নাম দেওয়া হচ্ছে না। কমিশন তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। এসআইআর প্রক্রিয়া সফল ভাবে বাস্তবায়িত এবং কোনও বৈধ ভোটারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না-পড়ার বিষয় নিশ্চিত করার সম্ভাব্য সব রকম চেষ্টা করছে কমিশন।
হলফনামায় কমিশন বার বার দাবি করেছে, বিপুল সংখ্যক বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে তোলা হচ্ছে। বিষয়টি ‘অতিরঞ্জিত’ করে পরিবেশনা করার প্রচেষ্টা চলছে। আর নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। কমিশনের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলি এসআইআর প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার বদলে সমালোচনার পথে হাঁটছে।