নরেন্দ্র মোদী। ছবি: ফাইল চিত্র।
শনিবার বাঁধ উদ্বোধন করলেন বটে প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে ওই মোহনপুরা বাঁধ প্রকল্পকে ঘিরে বহু কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠে যাওয়ায় তটস্থ থাকল প্রশাসন। এতটাই যে, সতর্কতা হিসেবে অনুষ্ঠানে আগত গ্রামবাসীদের কাউকে কালো জামা, মায় কালো রুমাল পর্যন্ত রাখতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
রাজগড়ের জেলা কালেক্টর কিন্তু কালো স্যুট পরেই স্বাগত জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীকে।
আসলে বাঁধ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বৃহস্পতিবারই গ্রামবাসীরা কালো পতাকা তুলেছিলেন। পাছে এ দিনও তেমন কিছু হয়, তাই এই বাড়তি সতর্কতা। অথচ কংগ্রেসের আরটিআই সেল-এর কর্মীরা দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আনার পরে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ও এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে। শুক্রবারই সে কথা জানিয়ে পিএমও তাঁদের এসএমএস করেছে বলেও ওই আরটিআই কর্মীদের দাবি। আরটিআই অর্থাৎ তথ্যের অধিকার আইনের সাহায্যে ওই ‘দুর্নীতি’র তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করেন কংগ্রেসের অজয় দুবে এবং আরটিআই কর্মী মনোজ ত্রিপাঠী।
সামনেই মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। নর্মদা আন্দোলনের রাজ্যে গত কিছু দিন যাবৎ কৃষক বিক্ষোভ, দলিত নিগ্রহ, ব্যপম কেলেঙ্কারি, গোরক্ষকদের দাপাদাপির মতো বিষয় নিয়ে শাসক বিজেপির দিকে বারবার আঙুল উঠেছে। এ বার মোহনপুরা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ শিবরাজ সিংহ চৌহানের দুশ্চিন্তা বাড়াল।
কংগ্রেসের আরটিআই কর্মীদের দাবি, ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকায় জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বহু রেশন কার্ড জাল করে নতুন নাম যোগ করা হয়েছে, বিয়ের পরে অন্যত্র চলে যাওয়া মেয়েদের নামেও টাকা কাটা হয়েছে, কখনও বা শিশুকে প্রাপ্তবয়স্ক বলে দেখিয়ে তার নামে টাকা বরাদ্দ বলে দেখানো হয়েছে।
অজয়ের কথায়, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ বণ্টন নিয়ে যখন আমরা আরটিআই মারফত খোঁজখবর শুরু করি, তখন শুধু গোপালপুরা গ্রামের তথ্য আমাদের দেওয়া হয়।’’ দুবের দাবি, তাতেই বহু অস্বচ্ছতার নজির মিলেছে এবং সামগ্রিক ভাবে ২৪টি গ্রামের ক্ষতিপূরণ বণ্টনেই দুর্নীতি হয়েছে বলে বোঝা যাচ্ছে। বহু ক্ষতিপূরণপ্রাপকের তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
দুবেরা আরও দাবি করছেন, এর আগে রাজগড় জেলার প্রাক্তন কালেক্টর এই বাঁধ প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকার জালিয়াতির হদিস পেয়ে জলসম্পদ দফতরের মুখ্যসচিবকে জানিয়েছিলেন। কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। দফতরের অতিরিক্ত সচিব রাধেশ্যাম জুলানিয়া অবশ্য বলছেন, ‘‘ভিত্তিহীন কথাবার্তা। আমার বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলায় অজয় দুবে ক’দিন আগেই জেলে গিয়েছেন। তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা এ থেকেই অনুমেয়।’’