— ফাইল চিত্র।
এক ঢিলে অনেক পাখি মেরে রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় ও মধ্যপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা না-করার কথা ঘোষণা করে দিলেন মায়াবতী। তবে লোকসভায় জোটের দরজা খুলেই রাখলেন।
বিধানসভা ভোটে মায়াবতী যত আসন চাইছেন, কংগ্রেস তা দিতে চাইছে না। কংগ্রেস মনে করে, বিএসপি-কে এত আসন ছাড়লে বিজেপিকে হারানো যাবে না। ফলে জোট নিয়ে সমস্যা ছিল। কিন্তু ঘোষণার জন্য মায়াবতী আজকের দিনটি বেছে নিলেন সকালে কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহের সাক্ষাৎকারকে ঢাল করে। দিগ্বিজয় বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের চাপে রয়েছেন মায়াবতী। তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলছে।
সাংবাদিক বৈঠকে এ বারে পাল্টা চালটি দিলেন বহুজন নেত্রী। বললেন, ‘‘জোটের বিষয়ে রাহুল ও সনিয়া গাঁধীর সদিচ্ছা আছে। কিন্তু কিছু কংগ্রেস নেতা ষড়যন্ত্র করছেন। দিগ্বিজয় সিংহ যা বলেছেন, তা ভিত্তিহীন। বরং বিজেপির এজেন্ট দিগ্বিজয়রাই ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে জোট চান না।’’ তাঁর কথায়, উদ্ধত কিছু কংগ্রেস নেতা মনে করছে একাই বিজেপিকে হারাবে। বাস্তব তা নয়। অতীতে তাদের ভুল আর দুর্নীতি এখনও ক্ষমা করেনি জনতা। বিজেপির মতো কংগ্রেসও বিএসপিকে শেষ করতে ষড়যন্ত্র করছে। তাই বিধানসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট হবে না।
মায়ার ঘোষণার পর মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি কমলনাথও বলেন, ‘‘আর জোটের কোনও সম্ভাবনা রইল না। আমরাই বিজেপিকে হারাব।’’ অখিলেশ যাদব আর্জি জানালেন, মায়া চাপের কাছে মাথা নামান না। জোট রক্ষা করতে কংগ্রেস এগিয়ে আসুক। উৎফুল্ল বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বললেন, ‘‘কংগ্রেসের পক্ষে জোট সম্ভব নয়। জোট তাদের ডিএনএ-য় নেই। শুধুই পরিবারতন্ত্র।’’ মায়ার আক্রমণের মুখে দিগ্বিজয়ও যুক্তি দিলেন, ‘‘আমিই মোদী-আরএসএসের সব থেকে বড় সমালোচক। রাহুল গাঁধীর নির্দেশই মেনে চলি।’’
কিন্তু মায়ার এই ঘোষণারও পরেও কংগ্রেস বিশেষ চিন্তিত নয়। কেন? তাঁদের কথায়, রাহুল ও সনিয়া গাঁধীর উপর আস্থা বজায় রেখে মায়াবতী বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি জোটেরই পক্ষে। প্রশ্ন করা হয়েছিল— লোকসভাতেও কি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়বেন না তিনি? কৌশলে জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন মায়া। আবার সিবিআই-ইডি নিয়ে মোদী-শাহ যে সত্যিই চাপ দিচ্ছেন, সে কথাও ঘুরিয়ে জনসমক্ষে তুলে এনেছেন। তা ছাড়া, যে তিন রাজ্যে জোট নিয়ে সমস্যা— সেখানে মায়ার দলের উপস্থিতি একেবারেই নগণ্য। কংগ্রেস তাই বলছে— জোট না হলেও খুব একটা ক্ষতি নেই।
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘অনেক সময় আবেগতাড়িত হয়ে অভিযোগ করা হয়। তবে মায়াবতী যখন রাহুল গাঁধী-সনিয়া গাঁধীর উপরে আস্থা রেখেছেন, তখন বাকি বিষয় আলোচনা করেই মিটিয়ে নেওয়া যাবে।’’