মায়াবতী।—ফাইল চিত্র।
নকল-ইস্তফার দু’দিন পরে আসল-ইস্তফা দিলেন মায়াবতী। সঙ্গে সঙ্গে ইস্তফা মঞ্জুরও হয়ে গেল। পদত্যাগকে হাতিয়ার করেই এ বার দলিত-মুখ হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন মায়া।
দলিতদের নিয়ে তাঁকে বলতে না দেওয়ায় রেগেমেগে ইস্তফার কথা ঘোষণা করে দু’দিন আগেই রাজ্যসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান বিএসপি-র শীর্ষ নেত্রী মায়াবতী। উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির কাছে তিন পাতার ইস্তফা পত্রও পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সেটি ইস্তফা দেওয়ার নিয়ম নয়। স্বাভাবিক ভাবেই তা খারিজ হয়ে যায়। আজ নিয়ম মেনেই আনসারির সঙ্গে দেখা করে ইস্তফা দেন মায়া। তা মঞ্জুরও হয়।
ইস্তফা দেওয়ার নিয়ম মায়াবতী জানতেন না, তা নয়। তা সত্ত্বেও সত্যিকারের ইস্তফা দিতে দু’দিন সময় নিলেন কেন? গত কালই রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন মায়াকে ফিরে আসার আবেদন জানান। তা অগ্রাহ্য করেই বিএসপি নেত্রী আজ ইস্তফা দেন। তাঁর দলের নেতাদের বক্তব্য, মায়া ইস্তফা দিতে যে খুব আগ্রহী ছিলেন, এমন নয়। কিন্তু রাগের মাথায় ঘোষণা করে দেওয়ার পর পিছিয়ে আসারও জায়গা ছিল না। যে দলিতদের রাজনীতি করে খোয়ানো জমি ফিরে পেতে চাইছেন মায়া, ইস্তফা না দিলে সেটি ভেস্তে যেত। দু’দিন ধরে পরবর্তী রণনীতি ভেবে তবেই পদক্ষেপ করেছেন নেত্রী।
কী সেই রণনীতি? বিএসপি সূত্রের মতে, সামনের এপ্রিলে এমনিতেই মায়াবতীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে রাজ্যসভায়। কিন্তু নিজের জোরে জিতে আসার মতো সংখ্যা এখন তাঁর নেই। কংগ্রেস নেতৃত্ব যদিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সপা ও কংগ্রেস মিলিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে আনবে রাজ্যসভায়। সে তো পরের কথা। আপাতত ইলাহাবাদের কাছে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে আসার পরিকল্পনা করছেন মায়া। উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলে সেই আসনে ভোট হবে। কংগ্রেস ও সপার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেখান থেকে জিতে আসতে চান বিএসপি নেত্রী। মায়া যদিও গত এক দশক ধরে লোকসভায় লড়েননি। অবশ্য লোকসভায় অসফল হলে মায়ার সামনে লালুর প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। লালু তাঁকে বিহার থেকে রাজ্যসভায় পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে শুধু সংসদে ফিরে আসা নয়, মায়ার আসল লক্ষ্য ফের দলিত মুখ হয়ে ওঠা। সে কারণেই ইস্তফাকে হাতিয়ার করে তিনি নিজের রাজনৈতিক জীবনের পুনরুদ্ধার চান।