মায়াবতীকে চাপ দিতে কংগ্রেসের অস্ত্র চন্দ্রশেখর

মায়াবতী বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন দেখে রাহুল গাঁধীর কংগ্রেস এ বার পাল্টা চাপের কৌশল নিল। সদ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়া ভীম সেনার নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ ওরফে রাবণকে এ বার দলিত সমাজের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে তুলে ধরার কাজ শুরু করল কংগ্রেস।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৮
Share:

মায়াবতী এবং চন্দ্রশেখর আজাদ

মায়াবতী বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন দেখে রাহুল গাঁধীর কংগ্রেস এ বার পাল্টা চাপের কৌশল নিল। সদ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়া ভীম সেনার নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ ওরফে রাবণকে এ বার দলিত সমাজের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে তুলে ধরার কাজ শুরু করল কংগ্রেস। উদ্দেশ্য হল, মায়াবতী বিজেপির দিকে ঝুঁকলে আজাদের মাধ্যমে তাঁর দলিত ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরানোর জুজু দেখানো।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী বহুজন সমাজের নেত্রীর সিংহাসন ধরে রাখতে চান। তাই চন্দ্রশেখর আজাদ জেলে থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে মায়াবতীকে নিজের ‘বুয়া’ বলে সম্বোধন করলেও, মায়াবতী সরাসরি তা খারিজ করে দিয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই ধরনের ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক সম্পর্কে যেতে চান না।

কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের দাবি, গত বছর সাহারানপুরে উচ্চবর্ণের সঙ্গে দলিতদের সংঘর্ষের পরে যোগী আদিত্যনাথের সরকার আজাদকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করে। কিন্তু জেলে থাকলেও গত এক বছরে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে আজাদের জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বেড়েছে। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই আজাদ হুঙ্কার ছেড়েছেন, ‘‘আমি এ দেশের সমস্ত দলিতকে ২০১৯-এ বিজেপি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর ডাক দিচ্ছি। যে বা যাঁরা এই কাজ করবেন, তাঁদেরই আমি সমর্থন করব।’’

Advertisement

বার্তা স্পষ্ট। আজাদের সমর্থন থাকবে বিজেপি বিরোধী জোটের দিকেই। তাই কংগ্রেস নেতারা দাবি করছেন, মায়াবতী উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদব ও কংগ্রেসের জোটে না এলে আজাদের ভীম সেনা নির্দল প্রার্থী দেবে। এসপি-কংগ্রেসের ভোট সেই ঝুলিতেই যাবে। আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তথা পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুসলিম নেতা ইমরান মাসুদকে।

রাজনীতিকদের মতে, কংগ্রেসের উদ্দেশ্য অবশ্য আদৌ আজাদের প্রার্থীদের জেতানো নয়। সেই জুজু দেখিয়ে মায়াবতীকে জোটের দিকে টেনে আনা। কংগ্রেস নেতারা জানেন, নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতায় আসা থেকে আটকানোর প্রধান শর্ত হল উত্তরপ্রদেশে বিজেপির আসন কমানো। তার জন্য মায়াবতীকে জোটে চাই। মায়াবতী জোটে না এলে কংগ্রেস, সপা ও আজাদের সংগঠন প্রচার করবে, নরেন্দ্র মোদী ও যোগীর রাজত্বে উত্তরপ্রদেশে দলিতদের উপরে অত্যাচার বেড়েছে। অথচ সেই ‘মনুবাদী’ বিজেপিকেই সমর্থন করছেন মায়াবতী।

মায়াবতী যে আসলে তাঁর ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের ভয়েই আসন রফা নিয়ে টালবাহানা করছেন, তা-ও কংগ্রেস নেতারা বুঝতে পারছেন। কিন্তু কংগ্রেসের নেতাদের যুক্তি, মায়াবতী এ-ও জানেন এখন বিজেপির হাত ধরলে তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্বই প্রশ্নের মুখে পড়বে। তা হলে আসন রফা নিয়ে এত টালবাহানা করছেন কেন মায়াবতী? উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘মায়াবতীর লোকসভায় এক জন সাংসদও নেই। মায়াবতী চান, ২০১৯-এ বিএসপি-র সাংসদের সংখ্যা তৃণমূলের চেয়ে বেশি হোক। যাতে বিরোধী জোটের সরকার গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হলে, তিনিই প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে এগিয়ে থাকেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন