খুদে প্রতিভা: জেফারসন জেরম মাইনগিয়াং। ছবি: টুইটার
শনিবার সকাল হলেই শিলংয়ের পোলো মাঠে এখন রংবাহারি জার্সিতে ছটফটে এক ঝাঁক কচিকাঁচার হাট। বয়স চার থেকে ১৩। পাঁচ ভাগে ভাগ করে চলছে লিগ। প্রতিটি বিভাগে ১২টি দল। সব মিলিয়ে কয়েকশো খুদে খেলোয়াড়। একেবারে ছোটদের খেলা ২০ মিনিটের। তার চেয়ে বড়দের ৫০ মিনিট। খেলা চলছে প্রতি শনিবার ও অন্য ছুটির দিনে। উত্তেজনা এমনই যে, কয়েকটি দলে খেলোয়াড়ের সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সকলকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। মেঘালয়ের ক্রীড়ামন্ত্রী বানতেইডর লিংডোর আশা, এই ছোটদের মধ্যে অনেকেই ভবিষ্যতে দেশের বিভিন্ন ময়দান কাঁপাবে।
কিকস্টার্ট অ্যাকাডেমির জেফারসন জেরম মাইনগিয়াং বেবি লিগের একটি ম্যাচে চার গোল দিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ। ১১ বছরের ফুটবল প্রতিভা জেফারসনকে বছরে সাড় চার লক্ষ টাকা স্কলারশিপ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ভাইচুং ফুটবল অ্যাকাডেমি। ফুটবল পাগল জেফারসনের প্রিয় দল আর্জেন্টিনা। প্রিয়তম খেলোয়াড় পাওলো ডিবালা। স্বপ্ন, এক দিন বল সে নিয়ে ছুটবে জার্মানি ডর্টমুন্ডে। সানিডেল স্কুলের ১০ বছরের ভিনসেন্ট বিনান খেলে রাইট ব্যাকে। ৭০ কিলোমিটার দূরে লিনডেম গ্রাম থেকে শিলংয়ে খেলতে আসছে মা-হারা ছেলেটি। চোখে স্বপ্ন, বড় ফুটবলার হবে।
একই বয়সের অলভিন এসান খিরিয়েম টাচলাইন নর্থ ইস্ট দলের স্ট্রাইকার। ছোট কাঁধে অনেক দায়িত্ব। তাই খেলা সপ্তাহে এক দিন হলে কি হবে, রোজ সকালে অনুশীলন করে সে। বাবা ল্যাম্বার্ট হিন্নেইয়েটা বলেন, ‘‘এই বয়সের ছেলেরা কম্পিউটার ও মোবাইল গেমেই ব্যস্ত থাকে। বাইরে খেলার আগ্রহই কমে গিয়েছিল। বেবি লিগ আসল খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহটা ফিরিয়ে এনেছে। তাতে শরীর ও মন দুই ভাল হবে। আমার ছেলে ইতিমধ্যে সেন্ট এডমন্ড স্কুলের জুনিয়র দলেও জায়গা পেয়েছে।’’
রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী লিংডোর মতে, ছোট থেকে প্রতিযোগিতামূলক খেলা খেললে দৈহিক ও মানসিক শক্তি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে। মেঘালয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তথা এআইএফএফের সহ-সভাপতি লারসিং মিং মনে করেন, তৃণমূল স্তর থেকে শিশু প্রতিভা খুঁজে বার করা ও প্রতিভার বিকাশের ক্ষেত্রে বেবি লিগ উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। মিজোরামে কিশোরদের ফুটবল লিগ অনেক দিন ধরেই চলছে। কিন্তু একেবারে ছোটবেলা থেকে ফুটবলে দক্ষ করে তোলার চেষ্টা আগে দেখেনি উত্তর-পূর্ব ভারত। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোয় ছোট বয়স থেকেই ম্যাচ খেলার অভ্যাস তৈরি করানো হয়। এখানে ছিল না। (শেষ)