রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ। চলছে সই সংগ্রহ। — নিজস্ব চিত্র
পদত্যাগ করলেন শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত মেঘালয়ের রাজ্যপাল ভি সম্মুগনাথন।
সম্প্রতি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনেন এক মহিলা। তাঁর অভিযোগ ছিল, গত বছর ৭ ডিসেম্বর, পিআরও পদের জন্য সাক্ষাৎকার দিতে জন্য তিনি রাজভবনে গিয়েছিলেন। আরও কয়েকজন মহিলা প্রার্থী সেখানে ছিলেন। মহিলার দাবি, রাজ্যপাল তাঁকে নিজের ঘরে ঢেকে নিয়ে জড়িয়ে ধরেন। অভিযোগ উড়িয়ে মেঘালয়ের স্থায়ী ও অরুণাচলের ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল জানান, চাকরি প্রার্থীরা তাঁর নাতনির মতো। তাঁদের নিছক
উৎসাহ দিতেই তিনি পিঠ চাপড়েছিলেন মাত্র।
ঘটনার পরে দাবি ওঠে ওই ঘরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হোক। কিন্তু জানা গিয়েছে, নিরাপত্তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজভবনের সিংহভাগ অংশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাই নেই। অভিযোগ, রাজ্যপালের নির্দেশে রাজভবনেও ছিল বহিরাগত মহিলাদের অবারিত দ্বার। এর পরেই গত কাল রাজভবনের কর্মীরা জোটবদ্ধ হয়ে সম্মুগনাথনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। একশোজন কর্মীর স্বাক্ষর-সহ স্মারক লিপি পাঠানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে।
স্মারক লিপিতে লেখা হয়েছে তামিলনাড়ুর এই প্রবীণ সঙ্ঘনেতা ২০১৫ সালে রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজভবনের ঐতিহ্য এবং নিয়মকানুন ভাঙতে শুরু করেন। রাজভবন লীলাক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভাঙা হচ্ছে।
যে শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে বিতর্কের শুরু সেই ঘটনা অস্বীকার করে রাজ্যপাল গত কালই দাবি করেন, তিনি নিজে ওই প্রার্থীকে ডাকেননি। সন্ধ্যা ৭টার পরে দেখাও করেননি। কিন্তু ওই মহিলা প্রার্থীর মোবাইলে রাজ্যপালের নম্বর থেকে পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা রয়েছে। রাজভবনের রেজিস্ট্রারেও দেখা যাচ্ছে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে রাজভবনে ঢোকেন ওই মহিলা। বের হন ৮টা ০৫ মিনিটে। ওই দিন ১০ জন মহিলা প্রার্থীকে ডেকেছিলেন রাজ্যপাল।
শ্লীলতাহানির ঘটনার প্রতিবাদে এবং রাজ্যপাল এ ভাবে রাজভবনের মর্যাদাহানি করায় মেঘালয়ের মহিলা সংগঠনগুলি নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। আজ বিকেলে রাজভবনের সামনে তাঁরা বিক্ষোভও দেখান। অবিলম্বে রাজ্যপাল বদলেরও দাবি উঠেছে। রাজ্যপাল অবশ্য দাবি
করেন, চাকরি না পাওয়া মহিলা প্রার্থীরা মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই কাজ করছে একটি চক্র।