রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডে ধৃতদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ পুলিশের। —ফাইল চিত্র।
মধুচন্দ্রিমায় হত্যাকাণ্ডে বড় তথ্য পেল মেঘালয় পুলিশ। জানা গিয়েছে, রাজা রঘুবংশীর হত্যার পর তাঁর একটি মোবাইলের হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ দেখতে বসেন নববধূ সোনম রঘুবংশী এবং তিন ভাড়াটে খুনি। রাজা এবং সোনমের কাছে মোট চারটি মোবাইল ছিল। রাজাকে খুনের পর তাঁর একটি ফোন ভেঙে ঝোপে ছুড়ে ফেলে দেন স্ত্রী। বাকি তিনটি ফোন নিজের কাছে রেখে সেখান থেকে চম্পট দেন ইনদওরের তরুণী।
রাজাকে হত্যার দিন কয়েক পরে ইনদওর যান সোনম। সেখানে নিজের ফোনটি চালু করেন তিনি। আবার সিম কার্ড ঢোকান ফোনে। ‘ডেটা অন’ করে প্রথমেই খোলেন হোয়াট্সঅ্যাপ। বাকি তিনটি ফোন অবশ্য বন্ধই করে রেখেছিলেন। উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদ থেকে তাঁর গ্রেফতারির পর থেকে মোবাইল নিয়ে একাধিক বার পুলিশি জেরার মুখে পড়েন সোনম। কিন্তু এখনও বিশেষ কিছু বার করতে পারেননি তদন্তকারীরা। তবে এটুকু তাঁরা নিশ্চিত যে রাজার যে ফোনটি ভেঙে ঝোপে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন সোনম, সেটা থেকে নানা রহস্যের সমাধান হতে পারে। উঠে আসতে পারে নানা তথ্য। মঙ্গলবার সোনম-সহ বাকি ধৃতদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণের পরে এখন রাজার ওই মোবাইলটির খোঁজ করছে পুলিশ। বাকি তিনটি মোবাইল খোঁজা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের যে যে জায়গায় গিয়েছিলেন সোনম, সেখানে।
মঙ্গলবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে মেঘালয় পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গিয়েছিল ওয়েই সাওডং জলপ্রপাতে। সেখানকার একটি নির্জন জায়গায় গত ২৩ মে খুন করা হয়েছিল ইনদওরের ২৯ বছরের ব্যবসায়ী রাজাকে। পুলিশ জানিয়েছে, যে তিন ভাড়াটে খুনিকে বরাত দিয়েছিলেন সোনম, তাঁদের প্রত্যেকেই অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছিলেন রাজাকে। রাজা খুন হওয়ার পর সোনম সোজা চলে যান ইনদওরে। সেখানে অগরা-বম্বে রোডের ধারে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। কয়েক দিন ওই ফ্ল্যাটে গা-ঢাকা দেওয়ার মধ্যেই রাজার দেহ উদ্ধার হয়। গত ২ জুন থেকে রটে যায় রাজার নববধূ নিখোঁজ।
মেঘালয়কাণ্ডে পূর্ব খাসি হিলের পুলিশ সুপার বিবেক সায়েম বলেন, ‘‘উনি (সোনম) ইতিমধ্যে অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। যে জায়গায় রাজাকে খুন করা হয়েছিল, সেখানে আমরা গিয়েছিলাম। ধৃতদের সকলকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই সময়ে তাঁদের ভূমিকার কথা অভিযুক্তদের মুখে শুনেছি আমরা। জানা গিয়েছে, রাজাকে যখন তিন ভাড়াটে খুনি আঘাত করছেন তখন, অকুস্থলেই ছিলেন সোনম। তিনি স্বামীর একটি ফোন নষ্ট করার চেষ্টা করেন। সব কিছুই পূর্বপরিকল্পিত ছিল। খুনের পর চার জন মিলে দেহ সরিয়েছিলেন। এর আগে কখনও ধৃতদের কেউ মেঘালয় আসেননি।’’ উল্লেখ্য, মেঘালয় পুলিশের একটি দল তদন্তের স্বার্থে ইনদওরে গিয়েছে। সেখানে আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে খবর।