প্রতীকী ছবি।
ফ্ল্যাট বাড়ির ভিতর থেকে প্রায়শই একটি বাচ্চা মেয়ের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসত। পড়শিরা জানতে চাইলে ফ্ল্যাটের মালকিন বলতেন— ‘নিজের কাজে মন দিন!’ বুধবার হরিয়ানার ফরিদাবাদের সেই বহুতলের বারোতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল ওই মেয়েটি। তবে এগারোতলার বারান্দা থেকে ঝুলিয়ে রাখা একটি জালে আটকে যায় সে। পড়শিরাই উদ্ধার করে তাকে। সারা গায়ে মারধরের চিহ্ন, পোড়া দাগ। এর পর থানা-পুলিশ। শেষমেশ সামনে এল এক ভয়াবহ কাহিনি।
কী সেই কাহিনি?
ফরিদাবাদের সরাই থানার পুলিশ আধিকারিক বলবীর সিংহ জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া ওই বাচ্চা মেয়েটি কণিষ্ক টাওয়ারে পরিচারিকার কাজ করত। অভিযোগ, বছর দুয়েক ধরেই ১৩ বছরের মেয়েটিকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন ওই ফ্ল্যাটের মালকিন। মেয়েটির উপর অকথ্য অত্যাচারেরও অভিযোগ উঠেছে। তার গায়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। নাবালিকাকে অত্যাচারের অভিযোগে ওই যুবতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
দেশের অর্থনীতির তথ্য তুলে আত্মরক্ষায় মুখ খুললেন মোদী
বিজেপি ছাড়া তৃণমূল দাঁড়াত না, খোঁচা মুকুলের
স্কুলে মাদক-লজেন্স, সতর্ক করা হচ্ছে কলকাতাকেও
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটের মালকিন আদতে বিহারের পটনার বাসিন্দা। ফরিদাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। বাচ্চা মেয়েটিও পটনায় থাকত। মেয়েটির মা-বাবা যুবতীটির বাড়িতে কাজকর্ম করতেন। পটনা থেকেই বাচ্চা মেয়েটিকে ফরিদাবাদের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন ওই যুবতী। কিন্তু, গত দু’বছরে মেয়েটিকে ফ্ল্যাটের বাইরে বেরতে বিশেষ কেউ দেখেননি। রুবেশ নামে এক ব্যক্তি বলেন, “বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ এগারোতলার বারান্দার জালে ঝুলছিল মেয়েটি।” এর পর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর দেওয়া হয় শক্তিবাহিনী নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকেও। শক্তিবাহিনীর মুখপাত্র ঋষিকান্ত বলেন, “মেয়েটির সারা গায়ে পোড়ার দাগ রয়েছে। ওই বাচ্চাটি মানসিক ভাবেও খুব খারাপ অবস্থায়।” উদ্ধারের পর তাকে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া পায়নি সে।
এই ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে ফরিদাবাদের শিশুকল্যাণ কমিটি। কমিটির চেয়ারপার্সন এইস এস মালিক জানিয়েছেন, মেয়েটিকে চাইল্ড প্রোটেকশন সেন্টারে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।