বণিকসভাতেও নজরে গুজরাত

শেষ রাতে ওস্তাদের মার দেওয়ার চেষ্টায় নরেন্দ্র মোদী বণিকসভার মঞ্চে গিয়ে গরিব-আমজনতাকে বার্তা দিলেন— আমি তোমাদেরই লোক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৮
Share:

শিল্পমহল বনাম গরিব আমজনতা। নরেন্দ্র মোদী আমজনতার পাশে।

Advertisement

বড় শিল্পপতি বনাম ছোট কারখানার মালিক বা ছোট ব্যবসায়ী। নরেন্দ্র মোদী ছোটদের পক্ষে।

শেষ রাতে ওস্তাদের মার দেওয়ার চেষ্টায় নরেন্দ্র মোদী বণিকসভার মঞ্চে গিয়ে গরিব-আমজনতাকে বার্তা দিলেন— আমি তোমাদেরই লোক।

Advertisement

গুজরাতে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের আগের দিন বিকেলে দিল্লিতে বসেও প্রধানমন্ত্রীর চোখ পড়ে রইল অমদাবাদে। বিজ্ঞান ভবনে শিল্পপতিদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘এই চাকচিক্য থেকে দূরের গরিবের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। সীমিত পড়াশোনা, কিন্তু স্বপ্নের সীমা নেই। ওই দুনিয়াই শিখিয়েছে, গরিবের প্রয়োজন বুঝে কাজ করতে হয়।’’

আমজনতার ভোট জয়ের লক্ষ্যেই আজ বণিকসভা ফিকি-র বার্ষিক সাধারণ সভায় দাঁড়িয়ে কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের বোঝাকে ইউপিএ-সরকারের সব থেকে বড় দুর্নীতি আখ্যা দিলেন। অভিযোগ তুললেন, আগের সরকার ব্যাঙ্কের দফারফা করে ছেড়েছে।

গুজরাতে প্রচারে গিয়ে রাহুল গাঁধী প্রতিটি সভায় অভিযোগ তুলেছেন, মোদী হাতে গোনা কয়েক জন শিল্পপতির স্বার্থ দেখেন। আজ মোদী তাঁর পাল্টা জবাবে বলেন, ‘‘কিছু কিছু বড় শিল্পপতিকে আগের সরকারের আমলে ব্যাঙ্কের উপর চাপ দিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এনপিএ নিয়ে যে হইচই, তা এই সরকারের জন্য আগের সরকারের রেখে যাওয়া সব থেকে বড় বোঝা।’’

দিল্লির বিজ্ঞান ভবনের প্রতিটি কথাই যাতে গুজরাতের গ্রামে গ্রামে পৌঁছয়, সেই লক্ষ্যে ইংরেজি
ছেড়ে ‘ভাইয়োঁ অউর বহনোঁ’ সম্বোধনে হিন্দিতে বক্তৃতা করেছেন মোদী। বিভিন্ন রাষ্ট্রের কূটনীতিকরা বুঝুক না-বুঝুক পরোয়া করেননি। ‘লাইভ ট্রানস্লেশন’-এর জন্য ইয়ারফোন হাতড়াতে হয়েছে তাঁদের। কংগ্রেসে নেতা আনন্দ শর্মা বলেছেন— এ থেকেই স্পষ্ট, মোদী কতটা চাপে রয়েছেন। তাঁর চাপেই ফিকি-র সভা এগিয়ে আনতে হয়েছে। যাতে এই মঞ্চ মোদী ভোট-প্রচারে লাগাতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিন বছরে এই প্রথম কোনও বণিকসভার বার্ষিক সভায় এলেন মোদী। এত দিন এড়িয়ে গিয়েছেন। ফিকি-র বিদায়ী সভাপতি পঙ্কজ পটেল গুজরাতের লোক। তাঁর আমন্ত্রণ রক্ষা করে এ বার ফিকি-র সভায় এলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি গরিবের কথাই বলতে এসেছেন।

শিল্পমহলকে প্রায় আয়নার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ইউপিএ-সরকারের আমলে যখন ব্যাঙ্কের এনপিএ বাড়ছিল, তখন ফিকি কি সতর্ক করেছিল? ফিকি-র সদস্যদের চার ভাগের এক ভাগ আবাসন, নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। মধ্যবিত্তরা দাম দিয়েও ফ্ল্যাট পাচ্ছেন না দেখেও আইন তৈরির জন্য চাপ দেয়নি কেন?

তাঁর সরকারের আমলে আর্থিক সংস্কারের খতিয়ান দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু মোদী তার থেকেও বেশি বলেছেন, আমজনতার জীবন সহজ করতে তাঁর সরকার কী কী করেছে। ফিকি-কর্তাদের বলেছেন, শুধু শিল্পমহল নয়, সরকার ও মানুষেরও কণ্ঠ হতে হবে তাঁদের। ফিকি-র নতুন সভাপতি রাশেষ শাহ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কথায় অনুপ্রাণিত হয়েই কাজ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন