নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
নোটবন্দির পর লাফিয়ে বেড়েছে তাদের আয়। প্রচার ও ভোট-খরচেও সেরা নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি। এই একই সময়ে আয় কমেছে কংগ্রেসের। আয়ের চেয়ে খরচ বেশি হয়েছে তাদের। আয় বা খরচে বিজেপির ধারেকাছে নেই কংগ্রেস।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোটবন্দির ঘোষণা করেছিলেন ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, এর সুযোগ নিয়ে কালো টাকাকে সাদা করেছে বিজেপি। ২০১৫-১৬ সালে তাদের আয় ছিল ছিল ৫৭১ কোটি টাকা। বিজেপির দেওয়া হিসেব বলছে, ২০১৬-১৭-তে আয় আরও ৪৬৩ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে আয় একলাফে বেড়ে গিয়েছে ৮১%! আয় যেমন বেড়েছে, তেমনই দরাজ হাতে ভোটে খরচও করেছে বিজেপি। আর এই সময়ে কংগ্রেসের আয় ১৪% কমে হয়েছে ২২৫ কোটি টাকা।
বিজেপির এই আয়ের সিংহভাগ এসেছে চাঁদা থেকে, আর কংগ্রেসের কুপনের মাধ্যমে। কিন্তু বিজেপি যে ৭১০ কোটি টাকা খরচ করেছে, তার মধ্যে ৬০৬ কোটি টাকা গিয়েছে ভোট আর প্রচারে। ভোটের জন্য কংগ্রেস খরচ করতে পেরেছে মাত্র ১৫০ কোটি টাকা। আয় কমে যাওয়ায় তাদের আগের বছরের গচ্ছিত ভাঁড়ারেও হাত পড়েছে। যার ফলে ২০১৬-১৭ সালের আয়ের থেকেও ৪৩% বেশি খরচ করে ফেলেছে কংগ্রেস।
তৃণমূল-সহ জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলির আয়-ব্যয়ের খতিয়ান গত ফেব্রুয়ারিতেই সামনে এনেছিল বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কংগ্রেস-বিজেপি তখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে আয়ের খতিয়ান দেয়নি। এ বারে তাদের তথ্য সামনে আসার পর দেখা যাচ্ছে, ৭টি জাতীয় দলের মধ্যে আয়ের শীর্ষে বিজেপিই। কংগ্রেস দ্বিতীয়। তবে ঢের পিছিয়ে।
কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, আয়ে টান পড়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও দলের দফতরের কর্মীদের পাঁচ মাসের বেশি মাইনে দেওয়া যায়নি। কর্নাটকেও এখন কম বাজেটে কত ভাল করে প্রচারে ছাপ ফেলা যায়, তারই পথ খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু বিজেপি নানা ভাবে নিজেদের আয় বাড়িয়ে নিয়েছে। দিল্লি-সহ দেশের প্রতি জেলায় দলের ভবন বানাচ্ছে। আজও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ দিল্লিতে নতুন ভবনের উল্টো দিকে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নামে একটি বড় পার্কের উদ্বোধন করেছেন। স্বচ্ছতার নামে যে নির্বাচনী বন্ড সরকার চালু করছে, তাতেও ফায়দা হবে শুধু বিজেপিরই।
বিজেপির বক্তব্য, নোটবন্দির সঙ্গে আয় বাড়ার কোনও সম্পর্কই নেই। হিসেবই বলছে, চাঁদা এসেছে বেশি। এই মুহূর্তে বিজেপির সদস্যসংখ্যা ১১ কোটি। যাদের সংগঠন বড়, তারা চাঁদা বেশি পাবেই। কংগ্রেস সব ক্ষেত্রেই বিজেপির ভূত দেখে।