KP Sharma Oli

দাবিতে অনড় ওলি, রাম মন্দিরের ভূমিপুজোয় ডাক মোদীকে

রামের জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক জিইয়ে রেখে বিতর্কের হুল ফুটিয়ে চলেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৫
Share:

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।—ছবি সংগৃহীত।

রামমন্দির নির্মাণ শুরুর আগে ভূমিপুজায় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ। তিনি আসবেন ধরে নিয়ে সাধু-সন্তদের মধ্যে সাজ-সাজ রব। প্রশাসনিক প্রস্তুতি। মন্দির গড়ার দায়িত্বে থাকা অছি পরিষদের বৈঠক। সব মিলিয়ে, এই করোনা-কালেও ‘বহু প্রতীক্ষিত’ রাম মন্দির ঘিরে আবেগের ঢল অযোধ্যায়।

Advertisement

কিন্তু তার মধ্যেও রামের জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক জিইয়ে রেখে বিতর্কের হুল ফুটিয়ে চলেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। সে দেশের থোরিকে তিনি রামের প্রকৃত জন্মস্থল বলে দাবি করার পরে এখন সেখানে খননকার্য শুরুর পরিকল্পনা করছে নেপালের পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যাকে আদতে বৌদ্ধধর্মের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বলে দাবি করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে বৌদ্ধ সন্ন্যাাসীদের একটি সংগঠনও। এমনকি, রাম জন্মভূমিতে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনেস্কোর খতিয়ে দেখা উচিত বলে তাদের দাবি।

অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার প্রার্থনায় এর আগে শিবপুজোর আয়োজন করেছিলেন মন্দির নির্মাণের দায়িত্বে থাকা শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সাধু-সন্ন্যাসীরা। কিন্তু করোনার কারণে তখন আসা হয়নি নরেন্দ্র মোদীর। এখন অছি পরিষদ চায়, আর দেরি না-করে মন্দির নির্মাণের কাজ পুরোদমে শুরু হোক অগস্ট থেকেই। সেই কারণেই তার আগে ভূমিপুজা ও শিলান্যাসে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছে তারা। পরিষদের মতে, হিন্দু ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে মোদীর হাতেই এই প্রকল্পের শিলান্যাস হওয়া উচিত।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছেন ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট নৃত্যগোপাল দাস। পরিষদের সদস্যদের আশা, দিল্লি থেকে অনলাইন-উপস্থিতির পথে না-হেঁটে, প্রকল্পের গুরুত্ব মাথায় রেখে নিজে আসবেন মোদী। শোনা যাচ্ছে, দিন ঠিক হতে পারে অগস্টের শুরুর দিকেই। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, শনিবারই অযোধ্যায় বৈঠকে বসছেন রামমন্দির নির্মাণ কমিটির প্রধান নৃপেন্দ্র মিশ্র। যিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর আসার দিনক্ষণ থেকে শুরু করে তাঁর নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন বিষয় ঘিরে আলোচনা হতে পারে সেখানে।

অযোধ্যার সাধুদের একাংশ বলছেন, শিলান্যাসে আসতে পারেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতও। বিশেষত যেখানে এই মন্দিরকে সারা বিশ্বের হিন্দুদের প্রধান তীর্থক্ষেত্র করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু ভেবেচিন্তে এগোতে হচ্ছে মূলত করোনার কারণে। মোদীর উপস্থিতিতে যদি বেলাগাম ভিড়ভাট্টা হয়, তার হলে অস্বস্তিতে পড়তে হবে তাঁকে। পরিষদের যদিও আশা, শনিবারের বৈঠকে এই সমস্ত সমস্যা এড়ানোর পথ পাওয়া যাবে।

তবে অযোধ্যার এই সাজ-সাজ রবের মধ্যেও রাম নিয়ে নিজের দাবি ছাড়ছেন না ওলি। “আসল অযোধ্যা নেপালে। রামও আদতে নেপালি।”- এই দাবির পরে নিজের দেশেই তিনি প্রবল সমালোচনার মুখে। কিন্তু তার পরেও বীরগঞ্জের কাছে যে থোরিকে তিনি আসল অযোধ্যা বলে দাবি করেছিলেন, সেখানে খনন কার্য শুরুর পরিকল্পনা করছে নেপালের পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ!

অস্বস্তির কাঁটা দেশেও। এর আগে অযোধ্যায় রাম জন্মভূমিতে মন্দির নির্মাণের জন্য মাটি সমান করার সময়ে শিবলিঙ্গ, মন্দিরের ভগ্নাংশ মিলেছিল বলে দাবি, সাধু-সন্ন্যাসীদের। কিন্তু বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের দাবি, ওই জায়গা ছিল তাঁদের ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। যার নাম ছিল সাকেত। যে কারণে ওই সন্ন্যাসীদের একটি সংগঠন 'আজাদ বুদ্ধ ধর্মসেনা'র দাবি, অযোধ্যার মাটি নিরপেক্ষ ভাবে খুঁড়ে দেখুক ইউনেস্কো। সেই কথাকে তুড়িতে উড়িয়ে ট্রাস্টের সাধুদের অবশ্য পাল্টা দাবি, চোখ ধাঁধানো রামমন্দির তৈরি শুধু সময়ের অপেক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন