মোদীর থেকে সম্মান প্রাপ্তি।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ৩০ হাজার জন। সবাইকে পিছনে ফেলে শেষ হাসি হাসলেন এক বঙ্গসন্তান। তাঁর হাতেই ডিজিটাল হল ভারত। বুধবার, বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী সেই স্বীকৃতি দিলেন বারাসতের রানা ভৌমিককে।
প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল গত বছর। দেশের মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের জন্য তাঁর একটা লোগো চাই। যাঁর আকা পছন্দ হবে, তিনি পাবেন স্বীকৃতি এবং আর্থিক পুরস্কার। তার পরের ঘটনা যেন ঠিক সিনেমার মতো! রানা নিজেই এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না, তাঁরই আঁকা লোগো জিতে নিয়েছে সেরার খেতাব। “প্রতিযোগিতাটা দেখে মনের খেয়ালে এঁকে ফেলেছিলাম। তার পরে সেটা পাঠিয়ে দিই। পরে যখন জানতে পারলাম, মোট ৩০ হাজার প্রতিযোগী নিজের আঁকা পাঠিয়েছেন, তখন আশা ছেড়ে দিই। কোনও খোঁজও আর রাখিনি ব্যাপারটা নিয়ে!”— বলছিলেন বিস্মিত গ্রাফিক ডিজাইনার।
সেরার শিরোপা জিতে নিলেও এক সময়ে আঁকাকে মোটেও গুরুত্ব দেননি বারাসতের হৃদয়পুরের রানা। বারাসত সরকারি স্কুল থেকে যখন পড়াশোনা শুরু, তখনও নয়। তার পরে বারাসত সান্ধ্য কলেজ থেকে অ্যাকাউন্ট্যান্সিতে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা, ছবি আঁকা তখনও নেহাতই একটা শখ। জীবনের ছবিটা কিন্তু এক ধাক্কায় বদলে গেল সে সময়েই। বাবার হঠাৎ মৃত্যু উপার্জনের তাগিদে গ্রাফিক ডিজাইনের পেশায় নিয়ে এল রানাকে। প্রথমে কলকাতা, পরে পায়ের তলার জমি আরও একটু শক্ত করতে ওই পেশাতেই দিল্লিতে থিতু হলেন তিনি। তার পরে হঠাৎই এক দিন ডিজিটাল ইন্ডিয়ার লোগো এঁকে ফেলা এবং ঠিক ২৬ জুন একটা ফোন পাওয়া!
“শুনলাম, প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে ফোন এসেছে! ওঁরাই জানালেন, আমার আঁকা পছন্দ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আমায় ১ জুলাই দেখা করতে বললেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে, ওঁর বাড়িতে।”— দিল্লি থেকে টেলিফোনে জানালেন উচ্ছ্বসিত রানা।
বুধবার, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেই দেখা করার পরে এখনও বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না বঙ্গসন্তানের। নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পেয়েছেন। আর, নিজের আঁকার কপিরাইট দিয়ে এসেছেন দেশের জন্য।
বাকিটা আর ব্যক্তিগত নয়— গ্রাফিক ডিজাইনার রানা ভৌমিকের আঁকা লোগো এখন আক্ষরিক অর্থেই পুরোপুরি সর্বজনীন।