শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদী।—ছবি এএফপি।
যাঁদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে আসা বাতিল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বাংলায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত দলীয় কর্মীদের পরিবারের সদস্যেরা বসলেন একেবারে প্রথম সারিতে। বিজেপি নেতারা বুঝিয়ে দিলেন, আগামী দিনে বাংলাকে ‘পাখির চোখ’ করতে চাইছেন তাঁরা।
কিছুটা নজিরবিহীন ভাবেই মোদীর দ্বিতীয় বারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণ হারানো বিজেপি কর্মীদের ৫৪টি পরিবারকে। যার জেরে গত কাল দিল্লি যাত্রা বাতিল করেন মমতা। প্রথমে অবশ্য তিনি মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপির নিহত কর্মীদের পরিজনেরা উপস্থিত থাকবেন শুনে মমতা সিদ্ধান্ত বদল করেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সৌজন্যের আবহ নষ্টের চক্রান্ত করেছে। তার প্রতিবাদেই তৃণমূল নেত্রীর দিল্লি না-যাওয়ার সিদ্ধান্ত।
আজ সকালে প্রায় ১২০ জনের ওই দলটি দিল্লি পৌঁছয়। দলটির বেশির ভাগ সদস্যকে রাখা হয়েছিল দিল্লি কালীবাড়িতে। পরে বেলা ৩টে নাগাদ তাঁদের বিজেপি সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই দলটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ রামলালের মতো নেতারা। বৈঠকে রাজনৈতিক সন্ত্রাসে প্রাণ হারানো নদিয়ার জয়দেব প্রান্তির স্ত্রী ঝর্না কিংবা ওই জেলারই বিপ্লব শিকদারের স্ত্রী শঙ্করী, পুরুলিয়ার দামোদর মণ্ডলের আত্মীয় পঙ্কজ মণ্ডল বিজেপির
শীর্ষ নেতৃত্বের সামনে রাজ্যের শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হন। ঝর্নারা বিস্তারিত ভাবে জানান, কী ভাবে তাঁদের পরিজনদের হত্যা করা হয়েছে। দোষীদের কড়া শাস্তির আর্জি জানান নিহতদের পরিজনেরা। বৈঠকের শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বিজেপি যে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, সেই বার্তা দিতে উপস্থিত অভ্যাগতদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে বসানো হয় নিহতদের পরিজনদের। অনুষ্ঠানের শেষে তাঁদের জন্য বিশেষ নৈশভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানেও নিহতদের পরিজনদের সান্ত্বনা দেন বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা। আজকের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পুলওয়ামা হামলায় নিহত আধাসেনার পরিবারেরাও।