‘ল্যান্ডস্লাইড ভিকট্রি’। ২০১৯ সালে সারা দেশে বিপুল ভোট পেয়ে ফের ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি সরকার। আজ সন্ধে ৭টায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু। শপথ নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি ভবনের ইতিহাসে সব চেয়ে বড় অনুষ্ঠান হতে চলেছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত প্রায় ছ’হাজার। উপস্থিত থাকবেন অম্বানী-টাটার মতো শিল্পপতি থেকে বলিউড ও ক্রীড়াজগতের একাধিক নক্ষত্র। চাঁদের হাটে কারা থাকতে পারেন আজ?
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদীকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রামনাথ কোবিন্দ। রাষ্ট্রপতি ভবনে ২০১৪ সালে উপস্থিত ছিলেন পাঁচ হাজার অতিথি, এ বছর ছাপিয়ে যেতে চলেছে সেই সংখ্যা। ইতিমধ্যেই মহাত্মা গাঁধী, অটলবিহারী বাজপেয়ীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে শপথের দিন শুরু করলেন মোদী।
প্রতিটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান, প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকার কথা এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। বিমস্টেকের নেতৃত্ব (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক কোঅপারেশন) উপস্থিত থাকার কথা। বাংলাদেশ, ভুটান, মায়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ রয়েছে শপথের অনুষ্ঠানে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানান, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিরও থাকার কথা অনুষ্ঠানে।
রবীশ কুমার বলেন, মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্ট এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিংও শপথে আসবেন। তাইল্যান্ডের তরফে রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসাবে থাকবেন গ্রিসাদা বুনর্যাচ।
মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ কুমার যুগনাথ ও কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সুরনবে জিনবেকভও উপস্থিত থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন, বলেছে বিদেশ মন্ত্রক।
আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যান ক্রিস্টিন লগার্দের আসার কথা অনুষ্ঠানে।
প্রায় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এলেও থাকছেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি শুধু মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে তা-ই নয়, সৌজন্যের আবহ নষ্ট করে রাজনৈতিক ‘প্রতিহিংসা’ চরিতার্থ করতে চাইছে। তারই প্রতিবাদে মোদীর উদ্দেশে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাবেন না।
ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক বুধবারই শপথ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। তিনি জানিয়েছেন যেতে পারছেন না অনুষ্ঠানে। তবে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীকে।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের আসার কথা।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এবং সনিয়া গাঁধীও উপস্থিত থাকবেন অনুষ্ঠানে।
শিল্পজগত থেকে মুকেশ অম্বানী, গৌতম আদানি, রতন টাটাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। অজয় পিরামল, জন চেম্বার্স, বিল গেটসকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আসতে পারেন তাঁরাও।
প্রাক্তন স্প্রিন্টার পিটি ঊষা, ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলে, জাভাগাল শ্রীনাথ, হরভজন সিংহ, ব্যাডমিন্টন তারকা সাইনা নেহওয়াল, পুলেল্লা গোপীচাঁদ, জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকারকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রজনীকান্ত এবং কমল হাসানও উপস্থিত থাকতে পারেন আজকের অনুষ্ঠানে।
বলিউড তারকাদের মধ্যে কঙ্গনা রানাওয়াত, শাহরুখ খান, সঞ্জয় লীলা ভন্সালী, কর্ণ জোহরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শপথের অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন শাহিদ কপূর।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকে লোকসভা ভোট পর্যন্ত যে সমস্ত মানুষ রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন বা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। থাকছেন ২০১৪ সালে বামনগাছিতে খুন হওয়া বিজেপি কর্মী সৌরভ চৌধুরী এবং পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় নিহত জওয়ান হাওড়ার বাবলু সাঁতরার পরিবারের লোকজনও। মোট ৫২টি পরিবারের ৭০ জন সদস্য থাকছেন এ দিন।