নাগপুরের জনসভায় নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।
শেষবেলার প্রচারে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরেকে সরাসরি আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাফ জানিয়ে দিলেন মহারাষ্ট্রকে ভাগ করার কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের। মোদী মহারাষ্ট্র থেকে মুম্বইকে আলাদা করার ‘গোপন পরিকল্পনা’ করছেন বলে সম্প্রতি অভিযোগ করেন এমএনএস প্রধান। সেই বিতর্কের জবাব দিতে গিয়েই আজ মুখ খোলেন মোদী।
মহারাষ্ট্রের ধুলে জেলায় আজ তিনি বলেন, “যত দিন আমি দিল্লিতে রয়েছি, বিশ্বের কোনও শক্তিই মহারাষ্ট্র ভাগ করতে পারবে না। আর মুম্বইকেও আলাদা করা যাবে না।” মোদীর মন্তব্য, “তুলো আর পেঁয়াজের পরে এ বার আর একটা মিথ্যে বলছে ওরা। মহারাষ্ট্র ভাঙা হবে। কেউ এটা করতে পারে? ছত্রপতি শিবাজীর মহারাষ্ট্রকে ভাগ করার মতো কেউ জন্মেছে?” যদিও একটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে মোদীর অতিসক্রিয়তা দেখে প্রশ্ন তুলেছিলেন এমএনএস সুপ্রিমো। কেন এক জন প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের ভোটে ২০টিরও বেশি প্রচারসভায় যোগ দিচ্ছেন। জানতে চেয়েছেন রাজ ঠাকরে। এই প্রসঙ্গেই তিনি অভিযোগ করেন, ভারতের বাণিজ্যনগরীর নিয়ন্ত্রণ চান মোদী। তাই তিনি মুম্বইকে আলাদা করার পরিকল্পনা করছেন।
শুধু এমএনএস নয়, মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দাগছে শিবেসনাও। সেনার মুখপত্রে আজও মোদীর সমালোচনায় লেখা হয়েছে, দিল্লিতে নিজের কাজ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী পড়ে রয়েছেন মহারাষ্ট্রে। সভা করছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এ রাজ্যের জন্য তিনি কিছুই করেননি। প্রতি দিন নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বিরোধীদের এই সব সমালোচনায় কান না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও আজ প্রচারে সরব হন। বিদর্ভে একের পর এক কৃষক আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে মোদী আজ সেই কৃষকদের ‘খুনিদের’ শাস্তি দেওয়ার ডাক দেন, “১৫ বছরের কংগ্রেস অপশাসনের বিরুদ্ধে ১৫ অক্টোবরকে বেছে নিন।” ওই দিনই মহারাষ্ট্রে ভোট।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকেও আক্রমণ করে এ দিন মোদী বলেন, কোনও দরিদ্র মানুষের ঘরে গিয়ে তাঁর খাবার ‘কেড়ে’ নিয়ে ছবি তোলার দরকার হয় না তাঁর। কারণ তিনি নিজেই গরিবের ঘরে জন্মেছেন। এই সূত্রে তিনি বলেন, “রাজনীতিকরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন করেন না। আমি রাজনীতিক নই। আপনাদের সেবক।” কংগ্রেস এবং এনসিপি মিলে ১৫ বছর ধরে যে ‘পাপ’ করেছে, তা ধুয়েমুছে সাফ করার আহ্বান জানান মোদী। জলগাঁওয়ে প্রচারে তিনি বলেন, “১৫ অক্টোবর উৎসবের দিন। কংগ্রেস-এনসিপি সরকারের পাপ মুছে দিন। দুর্নীতি আর ধ্বংসের ১৫ বছর শেষ হোক।”
কংগ্রেস তাঁর কাছে দু’মাসেই কাজের হিসেব চাইছে, এই অভিযোগ তুলে মোদী বলেন, “ওরা ৫০ বছরে কিছু করেছে? ওরা এত নির্লজ্জ যে ৬০ দিন পরেই আমার কাজের হিসেব চাইছে? এটা অবিচার নয়?” শেষে মোদীর আশ্বাস, “আমাদের শাসনের ৬০ মাস পরে প্রতি পাইপয়সার হিসেব দেব।”