মোহন ভাগবত ও অমিত শাহ। ছবি: এএফপি।
নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে লেখা বই প্রকাশ অনুষ্ঠান। অমিত শাহের মুখে হল মোদীর খোলাখুলি তারিফ। তবে মোহন ভাগবতের সব প্রশংসার পিছনে ছিল সূক্ষ্ম ভাঁজ। অথচ দু’জনের মুখ থেকে আজ প্রথম বার বেরিয়ে এল এক ‘প্রত্যয়’— ২০১৯ সালের পরেও আরও ৫ বছর ক্ষমতায় থাকবে মোদী সরকার।
নিজের বক্তব্যে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলছিলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে সব গরিব পরিবারের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে রান্নার গ্যাস। এ যাবৎ নরেন্দ্র মোদী ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালনের কথা বলেছেন। বারবার বুঝিয়েছেন, যেন বিরোধীরা একজোট হলেও ২০১৯-এ ফের ক্ষমতায় ফেরা সময়ের অপেক্ষা। আজ অমিত শাহের মতো বিজেপির সর্বোচ্চ নেতার মুখ থেকে ২০২৪ সালের কথা প্রথম বার বেরোল। আর তাতে সিলমোহর বসালেন স্বয়ং সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত।
বিন্দেশ্বর পাঠকের লেখা ‘দ্য মেকিং অফ লিজেন্ড’ বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে অমিত শাহ অবশ্য শুরু করেছিলেন একটি আপত্তি জানিয়ে। তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে সারল্যের সঙ্গে সকলের সঙ্গে মেশেন, তাতে ‘লিজেন্ড’ শব্দে তাঁর আপত্তি আছে। কিন্তু তার পর আধঘণ্টার বক্তৃতায় অমিত শাহ আগাগোড়া মোদীর ভূয়সী তারিফ করে বলে গেলেন, কী ভাবে আরএসএসের প্রচারক থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। গোটা দেশ ও দুনিয়ায় আজ তাঁর নামডাক। এত তারিফের মধ্যে এক বার ‘সীমান্ত নিরাপত্তা’র কথা উল্লেখ করলেন। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই চলতি যাবতীয় বিতর্ক এড়িয়ে গেলেন বিজেপি সভাপতি।
আরও পড়ুন: কাটল প্রথম দিন, তেজস্বী তবু নীরবই
তবে মোহন ভাগবতের মুখে মোদীর প্রশংসা হলেও কিন্তু পরতে পরতে ভাঁজ ছিল বিস্তর। প্রথমেই দাবি করলেন, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে মোদীর স্বয়ংসেবকের সফরই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। মোদীর ব্যক্তিত্ব, কর্তৃত্ব ও নেতৃত্বের পিছনে সেই সফরই কাজ করে। তাই মোদীর বাইরের চমকের পিছনেও আসল ব্যক্তিকে অধ্যয়ন করা উচিত। ভাগবতের মতে, প্রধানমন্ত্রী না-হয়েও কাজ করা যায়। কেউ অহঙ্কারে, বাধ্য হয়েও কাজ করে
ফেলেন। এই প্রসঙ্গে এক মন্তব্যে বিতর্ক
বাধালেন ভাগবত। তিনি বলেন, সমাজের এক ঠিকাদার পাওয়া গিয়েছে।
তা বলে বাকিরা নিশ্চিন্তে ঘুমোলে হবে না। সব কাজ সরকারের নয়।
তবে কথার বাঁধুনিতে পটু ভাগবতের আশা, লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য মোদী এখন সাময়িক ভাবে আকাবাঁকা পথ নিলেও শেষপর্যন্ত নাগপুরের গন্তব্যেই যাবেন। যা শুনে অনেকে মনে করছেন, আসলে ২০১৯ সালের পর মোদীর দ্বিতীয় জমানায় সঙ্ঘের কর্মসূচি পুরণেরই ইঙ্গিত দিলেন আরএসএস প্রধান। এখন উন্নয়নের মোড়কে যেটি অনেকটাই পাশে সরিয়ে রাখা রয়েছে।