Rainfall in India

মেঘালয়ে বৃষ্টির ঘাটতি ৪৫ শতাংশ, লাদাখে ১১৫ শতাংশ বেশি! খেয়ালি বর্ষায় কোন রাজ্যে কত বৃষ্টি হল?

গত কয়েক দশক ধরে মেঘালয়ে বৃষ্টির দিনের সংখ্যা কমছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে প্রতি বছর গড় বৃষ্টির দিনের সংখ্যা পঞ্চাশের দশকে ছিল প্রায় ১৬০ দিন। সেটা কমতে কমতে ২০১০ সালের পর হয়েছে ১৩০ দিনের আশপাশে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১০:৫২
Share:

‘মেঘের বাড়ি’ মেঘালয়ে এ বার বৃষ্টি কম! —ফাইল চিত্র।

‘মেঘের বাড়ি’তে আগের মতো বৃষ্টি হচ্ছে না। অন্য দিকে, শুষ্ক অঞ্চলে এ বার বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। সারা দেশে বৃষ্টিপাতের হিসাব কষে কোথায় কত ঘাটতি এবং কোথায় অতিরিক্ত বৃষ্টি হল এ বার তার হিসাব দিল মৌসম ভবন।

Advertisement

বর্ষাকালে দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হওয়ার কথা মেঘালয়ে। কিন্তু চলতি বছরে সেখানেই ৪৫ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি। যা দেশে সর্বোচ্চ। রাজ্যভিত্তিক বৃষ্টির পরিমাণ হিসাব করে এমনটাই বলছে মৌসম ভবন। তাদের সাম্প্রতিক হিসাব বলছে, গত ১ জুন থেকে ১০ অগস্ট পর্যন্ত মেঘালয়ে বৃষ্টি হয়েছে ৯৮৭.৭ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিকের থেকে ৪৫ শতাংশ কম।

‘মেঘালয়’ শব্দের অর্থ ‘মেঘের আবাস’ বা ‘মেঘের বাড়ি।’ বিশ্বের সবচেয়ে আর্দ্র স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম এটি। বছরে সেখানে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ১১,৭৭৭ মিলিমিটার। বিষুবরেখা এবং সমুদ্রের কাছাকাছি অবস্থান এবং পাহাড়ি ভূখণ্ডের উপস্থিতি এবং অনন্য ভূতাত্ত্বিক গঠনই এত বৃষ্টিপাতের কারণ। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব সাধারণত জুন মাসে শুরু হয়। চলে সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর পর্যন্ত। এই ক’টা মাস ভারী বৃষ্টিপাত হয় মেঘালয়ে। কিন্তু এ বার ঘাটতি। উল্লেখ্য, গত কয়েক দশক ধরে মেঘালয়ে বৃষ্টির দিনের সংখ্যা কমছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে প্রতি বছর গড় বৃষ্টির দিনের সংখ্যা পঞ্চাশের দশকে ছিল প্রায় ১৬০ দিন। সেটা কমতে কমতে ২০১০ সালের পর হয়েছে ১৩০ দিনের আশপাশে।

Advertisement

উল্টো দিকে, ‘ঠান্ডা মরুভূমি’ অঞ্চল লাদাখে এ বার গড় বৃষ্টির পরিমাণ সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। সেখানে ১১৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

এ বার বর্ষায় সারা দেশে বৃষ্টির চিত্রটা কেমন? মৌসম ভবন জানাচ্ছে, এ বার গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিক রয়েছে। বরং কিছুটা বেশিই। বার্ষিক ৫৩৫.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। এ বার এ পর্যন্ত ৫৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে দেশে। কিন্তু রাজ্যভিত্তিক বৃষ্টির পরিমাণে তারতম্য ঘটছে। যেমন, মেঘালয়ের মতোই এ বার গড় বৃষ্টিপাত কম অরুণাচল প্রদেশে। অসম, সিকিম এবং বিহারেও চলতি বছর বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। অরুণাচলে ৪০ শতাংশ, অসমে ৩৭ শতাংশ, সিকিমে ২০ শতাংশ এবং বিহারে ২৫ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। পাঁচ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে আবার স্বাভাবিকের চেয়ে গড় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি এ বার। ঝাড়খণ্ডে যেমন (৮৫৩.৭ মিলিমিটার) স্বাভাবিকের চেয়ে ৪১ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছে এ বছর। দিল্লিতে (৪৩৩.৫) স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৭ শতাংশ, রাজস্থানে (৪৩০.৬ মিলিমিটার) ৫৮ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে (৭৪৫.৩ মিলিমিটার) ৩০ শতাংশ এবং পদুচেরিতে (২৫৮.২ মিলিমিটার) ৩২ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

মৌসম ভবনের তথ্য অনুসারে লাদাখে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪.৮ মিলিমিটার। সেখানে এ বছর ৩১.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এবং আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সব মিলিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে এ বার বৃষ্টির ঘাটতি থাকছে। পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অংশেও একই ঘটনা। আবহবিদদের অনুমান, বৃষ্টিপাতের তারতম্য জারি থাকবে। আর এই বর্ষায় গড় বৃষ্টির পরিমাণ হতে পারে ১০৬ শতাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement