Rajya Sabha

ধর্নাস্থলে চা নিয়ে হাজির ডেপুটি চেয়ারম্যান, ফেরালেন সাংসদরা

তিনটি দাবি না মেটা পর্যন্ত অধিবেশন বয়কট করা হবে, রাজ্যসভায় ঘোষণা করলেন কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:২১
Share:

ধর্না তোলার পর সাসপেন্ড সাংসদরা। ছবি: পিটিআই

ধর্না তুলে নিয়ে অধিবেশন বয়কটে শামিল হলেন সাসপেন্ড হওয়া রাজ্যসভার আট সাংসদ। সোমবার রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বিরোধীদের তরফে জানিয়ে দেন, এর পর থেকে পুরো অধিবেশন বয়কট করছে বিরোধীরা। সেই সঙ্গে সাসপেন্ড আট সাংসদকে ধর্না তুলে বয়কটে শামিল হওয়ার আর্জি জানান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ধর্না তুলে নিলেন সাসপেন্ড সাংসদরা।

Advertisement

তার আগে মঙ্গলবার সকালে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের ধর্নাস্থলে চা নিয়ে হাজির হন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশনারায়ণ সিংহ। কিন্তু ফিরতে হল বিফল হয়েই। চা না খেয়ে আট সাংসদ ফের জানিয়ে দিলেন, তাঁদের এই অবস্থান অনির্দিষ্টকালের। হরিবংশকে খোঁচা দিয়ে সাংসদদের বক্তব্য, ওঁর এই পদক্ষেপ ‘লোকদেখানো’।

হরিবংশের এই প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে সাংসদদের অভব্যতার প্রতিবাদে এক দিনের অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হরিবংশ। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চিঠি লিখে তিনি এই সিদ্ধান্তের জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘সাংসদদের ব্যবহারে আমি মর্মাহত। যা ঘটেছে, তাতে আমি মানসিক চাপে রয়েছি। গত দু’দিন ঘুমোতে পারিনি।’’ পাল্টা চাপ বজায় রাখতে এ দিন রাজ্যসভার অধিবেশন চালু হতেই বিরোধীদের তরফে কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ জানিয়ে দিয়েছেন, সাংসদদের সাসপেনশন না তুললে রাজ্যসভার অধিবেশন বয়কট করবেন তাঁরা।

Advertisement

রবিবার কৃষি বিল পাশ ঘিরে রীতিমতো হাঙ্গামা হয় রাজ্যসভায়। তুমুল বিক্ষোভ, হই-হট্টগোলের পাশাপাশি ডেপুটি স্পিকারের চেয়ারের মাইক ভেঙে দেওয়া এবং রুল বুক ছেঁড়ার অভিযোগ ওঠে বিরোধী সাংসদদের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালেই তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, আপের সঞ্জয় সিংহ, কংগ্রেসের রাজীব সতাব, সিপিএমের কে কে রাগেশ-সহ আট সাংসদকে সাসপেন্ড করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু।

আরও পড়ুন: মোদীর আশ্বাস, ঘোষিত সহায়ক মূল্যও

কিন্তু তার পরেও সোমবার রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন সাসপেন্ড সাংসদরা। সেখানে দীর্ঘক্ষণ থাকার পর বাইরে এসে গাঁধী মূর্তির সামনে সংসদ ভবনের লনে ধর্নায় বসেন তাঁরা। সোমবার দিনভর ধর্নার পর তাঁরা জানিয়ে দেন, কৃষকদের স্বার্থে অবস্থান চালিয়ে যাবেন অনির্দিষ্টকালের জন্য। সোমবার সারারাতও তাঁরা সেখানেই ছিলেন। বিরোধী সাংসদরা তাঁদের খাবার দিয়ে যান। প্রায় সব বিরোধী দলের সাংসদরা গিয়ে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আসেন।

এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সাত-সকালেই চা-বিস্কুট নিয়ে হাজির হন হরিবংশনারায়ণ সিংহ। সঙ্গে ছিলেন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। সাসপেন্ড সাংসদদের সামনে চা-বিস্কুট পরিবেশনও করা হয়। কিন্তু কেউ সেই চা-বিস্কুট মুখে তোলেননি। বরং ডেপুটি চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দেন, তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্না চালিয়ে যাবেন। ‘চা-কূটনীতি’ ব্যর্থ হওয়ায় ফিরে যান ডেপুটি চেয়ারম্যান। পরে এক সাংসদ বলেন, উনি সংবাদমাধ্যমের লোকজনকে নিয়ে ছবি তুলে লোক দেখাতে এসেছিলেন।

আরও পড়ুন: সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে গণআন্দোলনে কংগ্রেস

যদিও রঘুবংশের এই প্রয়াসকে সাধুবাদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘যাঁরা আক্রমণ করেছেন, তাঁদের জন্য চা নিয়ে যাওয়া হরিবংশের বিনয়ী ও উদার হৃদয়ের পরিচায়ক। তাঁর মহত্বের নিদর্শন। দেশবাসীর সঙ্গে আমিও হরিবংশকে অভিনন্দন জানাই।’’

বিরোধীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ এই ডেপুটি চেয়ারম্যানকে ঘিরেই। তাঁদের অভিযোগ, হরিবংশ জোর করে বিল পাশ করাতে তাড়াহুড়ো করেছেন। খারিজ করে দিয়েছেন সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর আর্জি। তার পর ভোটাভুটির দাবিও মানেননি। এমনকি, পরের দিনের জন্য অপেক্ষা না করে সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সভা চালিয়ে গিয়েছেন বিল পাশ করানোর জন্য। গণতন্ত্র ও সংবিধানকে হত্যা করেছেন ডেপুটি চেয়ারম্যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন