প্রতীকী ছবি।
গত সাড়ে তিন বছরে রেলে হওয়া দুর্ঘটনার পিছনে ট্রেন লাইনের খারাপ দশাকেই মূলত দায়ী করল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)। সুরক্ষা প্রশ্নে সমালোচনার মুখে পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ভূমিকাও।
খারাপ লাইন প্রভাব ফেলেছে ট্রেনের গতিতেও। গত তিন বছরে মূলত পাঁচটি জোনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সিএজি রিপোর্টে জানিয়েছে, ওই পাঁচটি জোনে লাইন খারাপ থাকায় মোট ২৯৪টি সেকশনে ‘স্পিড রেসট্রিকশন’ বসাতে বাধ্য হয়েছে রেল। ফলে দূরপাল্লার ট্রেন ধীরে চলছে। ওই ২৯৪টি সেকশনের মধ্যে ২৯টি সেকশন রয়েছে রেলের ‘হাই ডেনসিটি’ নেটওয়ার্কে। ওই নেটওয়ার্কের আওতায় থাকা লাইন দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সংখ্যা এত বেশি যে নিয়মিত ভাবে লাইনে নজরদারি বা রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সিএজি। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। উপরন্তু লাইনে ফাটল ধরার জন্য যে আলট্রাসোনিক ফ্ল ডিকেটশন (ইউএসএফডি) মেশিন থাকা দরকার তা-ও নেই অনেক জোনের। রিপোর্টে রয়েছে, এতে লাইনের ইস্পাতের শক্তি আদৌ রয়েছে কি না তা-ও জানা যাচ্ছে না। এমনকী বহু ক্ষেত্রে ২২ বছর ধরে লাইন পাল্টানো হয়নি বলে জেনেছে সিএজি। পাঁচটি জোনের সমীক্ষায় ২৭৪টি লাইনে ফাটল ও ৪৫৬টি ঢালাই ভাঙার নমুনা মিলেছে। দক্ষিণ-পূর্ব জোন নিয়ে সিএজি জানিয়েছে, দুর্ঘটনা রোখার মতো আগাম ব্যবস্থা নেই ওই জোনের।
সিএজি জানিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই সুরক্ষার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে রেল। নিয়োগ বন্ধ দীর্ঘ দিন। ফলে জোনগুলিতে ৯ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত পদ খালি। আজ সিএজি-র রিপোর্ট সংসদে পেশ হতেই বিকেলে মুখ খোলে রেল। মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক মাসে রেলে প্রায় ৯০ হাজার ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়া হবে। লাইন পাল্টানোর ক্ষেত্রে চলতি বাজেটে ১১, ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে মন্ত্রক। আগামী এক বছরে প্রায় ৪৫০০ কিলোমিটার লাইন পাল্টে ফেলা হবে। নতুন লাইনের চেয়েও পুরনো লাইন পাল্টানোকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে মন্ত্রক।