মায়ের হাতেই বন্দি মেয়ে, ঘরের ভিতর আবর্জনার স্তূপে আটকে তরুণী!

বন্ধ ঘরে গোঙানি শুনে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। পুলিশ দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে, বিপুল আবর্জনার স্তূপে আটকে রয়েছেন এক তরুণী। উস্কোখুস্কো চুল, দেখে মনে হয় বহুদিন স্নান হয়নি। ঘরের মধ্যে একটি নোংরা বিছানা। বনবন করে ঘুরছে টেবিল ফ্যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ১০:০০
Share:

বন্ধ ঘরে গোঙানি শুনে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। পুলিশ দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে, বিপুল আবর্জনার স্তূপে আটকে রয়েছেন এক তরুণী। উস্কোখুস্কো চুল, দেখে মনে হয় বহুদিন স্নান হয়নি। ঘরের মধ্যে একটি নোংরা বিছানা। বনবন করে ঘুরছে টেবিল ফ্যান।

Advertisement

পূর্ব দিল্লির গণেশ নগর এলাকার ঘটনা। পড়শিরা জানান, ১৭ বছরের ওই তরুণীর নাম পিহু ঘোষ। তার মা কৃষ্ণা ও বড় মেয়ে পাপিয়া পাশেই থাকেন। বছর খানেক ধরে মানসিক অসুস্থতার কারণে এই ঘরে বন্দি করে রেখেছেন ছোট মেয়েকে। দু’বেলা মেয়েকে খাবার আর জল দিতে আসেন। গত শনিবার ঘর থেকে আওয়াজ পেয়ে পড়শিরাই খবর দেন পুলিশকে। পিহুকে পাঠানো হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। মায়েরও কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রবীন্দ্র যাদব বলেন, মেয়েটি মানসিক অবসাদে ভুগছে। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, বাইরে বেরোনো তাঁর পছন্দ নয়। নিজেকে ফ্ল্যাটবন্দি করে রেখেছেন। সে কারণে জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ চাপানো যাচ্ছে না। পড়শিরা অবশ্য এ নিয়ে আগেই আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু মুখ বন্ধ রাখার জন্য কৃষ্ণা টাকাও দেন তাঁদের। তবে গোঙানি শোনার পর আর পরোয়া করেননি প্রতিবেশীরা।

Advertisement

মানসিক পুনর্বাসনের সঙ্গে যুক্ত মনস্তত্ত্ববিদ অমৃতা পণ্ডার মতে, কোনও মা-ই তাঁর সন্তানকে অসুস্থ পরিবেশে বড় করতে চান না। এখানে সন্তানের অসুস্থতা তো আছেই, পাশাপাশি মা যে ভাবে অসুস্থ পরিবেশে মেয়েকে রেখেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে মা-ও মানসিক ভাবে সুস্থ নন। ছোট মেয়ের অবসাদ কেন হল, সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।

বর্ধমানের বিশ্বরম্ভা গ্রামের মেয়ে কৃষ্ণা। নব্বই সালে বিয়ে হয় নদিয়া জেলার বালিডাঙ্গা ফরিদপুরের ধনঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে। কিন্তু ২০১০ সালেই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় এই বঙ্গদম্পতির। দিল্লির ফ্যামিলি কোর্ট ও কারকাডুমা আদালতে এখনও চলছে খোরপোষের মামলা। পুরনো দিল্লিতেই এক ছোটো মুদিখানা দোকান চালান ধনঞ্জয়। আজ তিনি বললেন, ‘‘ছোট মেয়েকে কেন আটকে রাখা হয়েছে, তা ওর মা-ই বলতে পারবে। আমার সঙ্গে মেয়েদের দেখা করতেই দেয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন