প্রতীকী ছবি।
এক বার নয়, দু’-দু’বার। চারতলা বাড়ির ছাদ থেকে মেয়েকে ধাক্কা মায়ের। জখম মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে ছাদ থেকে ফের ছুড়ে ফেললেন মা। বেঙ্গালুরুর জে পি নগরের এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ন’বছরের মেয়ের। ঘটানটি রবিবারের। নিহত মেয়েটির নাম আশিকা সরকার ওরফে শ্রেয়া। অভিযুক্ত মায়ের নাম স্বাতী সরকার। এই ঘ়টনার পরেই প্রতিবেশীরা স্বাতীকে লাইটপোস্টে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ স্বাতীকে গ্রেফতার করেছে।
ন’বছরের শ্রেয়া ভাল করে কথা বলতে পারত না। এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘শ্রেয়া সবে মাত্র কথা বলতে শিখেছিল। তা-ও ভাল করে বলতে পারত না। সেই কারণে সে স্কুলেও যেত না।’’ এই সব কারণে হতাশা থেকেই স্বাতী এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রেয়া এবং স্বাতী এক বছর ধরে ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। আগে স্বাতী একটি স্কুলে পড়াতেন। তাঁর স্বামী কাঞ্চন সরকার আলাদা থাকেন। কাঞ্চন একটি আইটি সংস্থায় কাজ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাড়ে তিনটে নাগাদ একটা চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় শ্রেয়া পড়ে রয়েছে। আর ছাদে স্বাতী দাঁড়িয়ে। প্রথমে সকলে ভেবেছিলেন শ্রেয়া বোধ হয় ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে। কিন্তু স্বাতী শ্রেয়াকে টানতে টানতে ফের ছাদে নিয়ে যেতে থাকেন। সকলে স্বাতীকে জিজ্ঞাসা করেন, কী হয়েছে? স্বাতী ধমকে বলেন, ‘‘নিজের চরকায় তেল দাও।’’ এর পরেই শ্রেয়াকে ছাদে নিয়ে গিয়ে স্বাতী ফের ছুড়ে নীচে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। কোনও কোনও প্রতিবেশীর দাবি, দ্বিতীয় বার শ্রেয়াকে ধাক্কা মেরে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার আগে তার পোশাক বদলে দেন স্বাতী। এক জন মায়ের এই কাণ্ড দেখে শিউরে ওঠেন প্রতিবেশীরা। পু্লিশ জানিয়েছে, মেয়েকে খুনের পরে পালানোর চেষ্টা করেন স্বাতী। প্রতিবেশীরা তাঁকে ধরে লাইটপোস্টে বেঁধে রাখেন। সেই সময় স্বাতী চিৎকার করতে থাকেন, ‘‘আমার মেয়ের সঙ্গে আমি যা খুশি তাই করব। কারওর এই নিয়ে প্রশ্ন করার কোনও অধিকার নেই।’’ প্রতিবেশীদের কথায়, ‘‘কেমন একটা মানসিক বিকারগ্রস্তের মতো আচরণ করছিলেন স্বাতী।’’