(বাঁদিকে) বিচারপতি যশবন্ত বর্মা এবং জগদীপ ধনখড় (ডানদিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
নগদকাণ্ডে অভিযুক্ত ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার ইমপিচমেন্ট (বরখাস্ত) নিয়ে রাজ্যসভায় বিরোধী সাংসদদের আনা প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছিলেন তিনি। শুরু হয়েছিল সই সংগ্রহ অভিযান কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি (এবং পদাধিকার বলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান) পদ থেকে জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফার পরে সেই প্রক্রিয়া বাতিল হতে চলেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক রাজ্যসভা সাংসদের সই বা রাজ্যসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের অনুমোদন মিললেও পরবর্তী সাংবধানিক প্রক্রিয়া শুরুর জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে সেটি সংসদের উচ্চকক্ষে পেশ করা হয়নি। ফলে গোটা প্রক্রিয়াটি বাতিল করা হচ্ছে। রাজ্যসভার নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। প্রসঙ্গত, বুধবার নির্বাচন কমিশন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তবে গোটা প্রক্রিয়া শেষ হতে প্রায় এক মাস সময় লাগতে পারে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লোকসভায় এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। অন্তত ১০০ জন সাংসদ ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে সই করে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে তা জমা দেওয়ার পরে স্পিকার তা গ্রহণযোগ্য মনে করলে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করবেন। অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে ওই কমিটি তাঁকে ইমপিচের সুপারিশ করবে। তা নিয়ে ভোটাভুটি হবে সংসদের দুই কক্ষে। প্রসঙ্গত, সোমবার উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ধনখড়। বিরোধীদের তরফে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, পোড়া নোটকাণ্ডে অভিযুক্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে আনা ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব গ্রহণ করার কারণেই তাঁকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানের ১২৪(৪) এবং ২১৮ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারপতিকে অপসারণের জন্য সংসদে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনা যেতে পারে। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে সংসদের উচ্চ কক্ষ তথা রাজ্যসভায় কমপক্ষে ৫০ জন সদস্যের স্বাক্ষর প্রয়োজন। আর লোকসভায় প্রয়োজন ১০০ জনের স্বাক্ষর। যদি প্রস্তাবটি উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে পাশ হয়, তা হলে পরবর্তী ধাপ হিসাবে লোকসভার স্পিকার অথবা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান দেশের প্রধান বিচারপতির কাছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের অনুরোধ করবেন। কমিটিতে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের এক জন বর্তমান বিচারপতি, হাই কোর্টের এক প্রধান বিচারপতি এবং সরকারের মনোনীত কোনও বিশিষ্ট আইনজ্ঞ। সেই কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।