‘মোগলি গার্ল’। ছবি: সংগৃহীত।
‘হ্যাপি ফ্রেন্ডশিপ ডে’।
আজকের দিনে আমরা বন্ধুদের সঙ্গে অটুট বন্ধনের কামনা করি। জীবনে চলার পথে বন্ধুত্বের ভুরি ভুরি উদাহরণ আমাদের চোখে পড়ে, কানে আসে। আজকের দিনেই এক ‘বিরল’ বন্ধুত্বের নিদর্শন পাওয়া গেল উত্তরপ্রদেশের একটি হোমে।
এহসাস আর পূজা— একই হোমের দুই বন্ধু। বন্ধুত্বও বেশি দিনের নয়। মাত্র তিন মাস। কিন্তু তাদের সখ্যতা দেখে সে কথা বোঝার উপায়-ই নেই যে সদ্য বন্ধুত্বের রাস্তার হাঁটতে শুরু করেছে তারা।
আরও পড়ুন: ফ্রেন্ডশিপ ডে-তে কাজলকে ভুলেই গেলেন কর্ণ!
এহসাস, যাকে কয়েক মাস আগেই সারা দেশ ‘মোগলি গার্ল’ হিসাবেই চিনত। গত জানুয়ারিতে উত্তরপ্রদেশের কাটারনিয়াঘাটের একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। গায়ে পোশাক ছিল না, পশুদের মতো আওয়াজ করত। পশুদের মতো চলাফেরা। সেই ‘মোগলি গার্ল’-এর এখন রাজ্যেরই একটি হোমে ঠাঁই হয়েছে। দীর্ঘ আট মাস পেরিয়ে গিয়েছে। আচরণে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে তার। কিন্তু ভাষার বিষয়টা এখনও রপ্ত করে উঠতে পারেনি।
আরও পড়ুন: তার চেয়ে ‘বন্ধু’ হলেই হয়
এই হোমেই তাঁর সাক্ষাত্ হয় বছর ষোলোর পূজার সঙ্গে। পূজা আর চার-পাঁচটা মেয়ের মতো স্বাভাবিক নয়। কিন্তু তার দায়িত্বজ্ঞান অপরিসীম। এহসাস-ই এখন তাঁর সবচেয়ে কাছের। আর এহসাস-ও পূজা ছাড়া চলতে পারে না। এহসাস-এর দিনটা শুরু হয় পূজার হাত ধরেই। দাঁত মাজা, খাওয়া, জামাকাপড় পরা— এ সবের প্রয়োজন হলেই হাজির হয়ে যায় পূজা। কেউ কারও ভাষা বোঝে না, কথা বোঝে না অথচ সখ্যতার বিন্দুমাত্র খামতি কিন্তু চোখে পড়বে না! নির্দ্বিধায়, নির্বিবাদে এহসাসের যাবতীয় প্রয়োজন মেটাতে কসুর করে না পূজা। তাদের দু’জনের বোঝাপড়াতে বেশ খুশি হোম কর্তৃপক্ষও। পূজার পাশাপাশি, হোমের প্রশিক্ষকরাও এহসাসকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। ধীরে ধীরে এহসাস বিষয়গুলো রপ্ত করতে শুরু করেছে বলেই জানান হোমের চিকিত্সক সুরেশ ধাপোলা।