অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানির সঙ্গে একই আসনে বসতে চাইছে ভারত। তবে, উন্নয়নের নিরিখে নয়। এমনকী, সাধারণ মানুষদের সঙ্গে নিয়েও নয়। নিজেদের বেতনের পরিকাঠামো দিয়েই ওই সব উন্নত দেশের সমপর্যায়ে উঠতে চাইছেন ভারতীয় সাংসদেরা।
সাংসদদের দাবি, ৫০ হাজার থেকে এক ধাক্কায় তাঁদের বেতন এক লাখ টাকা করতে হবে। এর সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ সুবিধার যে বহর তারা চেয়েছেন, তা যে কোনও উন্নত দেশের থেকেও বেশ বাড়তি। অথচ ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের সাংসদদের তাতে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই! তাঁরা নিজেদের দাবিতে কার্যত অনড়। বেতন দ্বিগুণ করার দাবিতে একযোগে সরব হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, সাসংদদের সেই দাবি সরকার মানতে চায়নি। তাই, এ বার অন্য পথে হাঁটলেন সাংসদরা। তুলনা করে বসলেন ব্রিটেন, আমেরিকা এবং জার্মানির পার্লামেন্ট-সদস্যদের বেতনের সঙ্গে! ভারতের সঙ্গে এই দেশগুলির আর্থসামাজিক বৈষম্য যাই থাকুক না কেন, এ দেশের সাংসদরা চান তাঁদের মাইনে যেন সমান হয়! অথচ বাকি সমস্ত নিরিখে ভারত কিন্তু এই সব দেশের থেকে বহু বহু গুণ পিছিয়ে। অর্থনৈতিক ভাবে তো বটেই, সামাজিক ভাবে এবং সর্বোপরি উন্নয়নের মাপকাঠিতেও কোনও তুলনাতেই আসে না। কিন্তু, নিজেদের কথা বলতে গিয়ে এ সবের কোনওটির না উল্লেখ করে এ দেশের সাংসদেরা শুধু নিজেদের মাইনের উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমরা কত্ত পিছিয়ে!’ দাবি, সরকারি কর্মচারীদের মতো তাঁদেরও নিয়মিত ভাবে বেতন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ কোনও পদ্ধতি মেনে চলুক সরকার।
সূত্রের খবর, সোমবার বেতন বৃদ্ধি এবং ভাতা সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে সাংসদদের কমিটিতে আলোচনা হয়। সেখানে বেতন দ্বিগুণ করার দাবি খারিজ হয়ে গিয়েছে। কেননা, নিয়ম অনুযায়ী সাংসদদের বেতন কাঠামোর পুনর্বিন্যাস হয় প্রতি ১০ বছর অন্তর। পাঁচ বছর আগেই নতুন কাঠামো তৈরি হয়েই ৫০ হাজার বেতন হয়েছে। বেতন বাদেও সাংসদেরা আলাদা গাড়ি, গোটা দেশ জুড়ে তাঁদের নিরাপত্তা, সমস্ত রাজ্যের গেস্ট হাউসে বিনামূল্যে থাকার সুবিধা, প্রাক্তন সাংসদদের বিনামূল্যে বিমানভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু, এই সব দাবিও এ দিন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।