মন্দির মামলায় দেরি, ক্ষুব্ধ যোগী

আজ সুপ্রিম কোর্টে যোগী সরকারের অভিযোগ, মুসলিম সংগঠনগুলি এখন ১৯৯৪-এর ইসমাইল ফারুকি মামলায় রায়ের পুনর্বিবেচনা চাইছে। তার ফলে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা অযোধ্যার জমি বিবাদের মামলার শুনানিতে আরও দেরি হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ০৪:২৫
Share:

যোগী আদিত্যনাথ

মুসলিম সংগঠনগুলি রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি দেরি করাতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলল যোগী আদিত্যনাথের সরকার।

Advertisement

কিছু দিন আগে অযোধ্যার সাধুরা যোগী আদিত্যনাথের সামনেই বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় হোক বা না হোক, ২০১৯-এর আগেই রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু হবে। ঠিক যে ভাবে বাবরি মসজিদের কাঠামো মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যোগী সে দিন তাঁদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলেন, রামের আশীর্বাদ মিললেই মন্দির তৈরি হবে।

আজ সুপ্রিম কোর্টে যোগী সরকারের অভিযোগ, মুসলিম সংগঠনগুলি এখন ১৯৯৪-এর ইসমাইল ফারুকি মামলায় রায়ের পুনর্বিবেচনা চাইছে। তার ফলে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা অযোধ্যার জমি বিবাদের মামলার শুনানিতে আরও দেরি হচ্ছে।

Advertisement

১৯৯৪-এর ওই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছিল, মসজিদ ইসলাম ধর্মে আবশ্যিক নয়। আজ মুসলিমদের হয়ে আইনজীবী রাজীব ধবন যুক্তি দিয়েছেন, যদি মসজিদে মুসলিমদের নমাজকে স্বীকৃতি দেওয়া না হয়, তা হলে ইসলাম ভেঙে পড়বে এবং অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চের সামনে ধবনের দাবি, এই কারণেই সাংবিধানিক বেঞ্চে ১৯৯৪-এর ওই রায়ের পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।

এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। উত্তরপ্রদেশ সরকারের হয়ে তাঁর যুক্তি, ১৯৯৪-এর পর থেকে এত দিন এই বিষয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেননি। অযোধ্যা নিয়ে ২০১০-এ ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের পরেও এ নিয়ে কেউ কোর্টে আর্জি জানাননি। উত্তরপ্রদেশ সরকার নতুন করে তোলা এই আর্জির বিরোধিতা করছে। কারণ অযোধ্যার বিবাদ প্রায় ১০০ বছর ধরে ফয়সালার অপেক্ষায় রয়েছে। হিন্দু সংগঠনের পক্ষে সি বৈদ্যনাথনেরও যুক্তি, সরাসরি জমি বিবাদের ফয়সালা হোক। সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলা পাঠানোর প্রয়োজন নেই।

উত্তরপ্রদেশ সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানির প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ১৩ জুলাই ফের শুনানি হবে।

ধবনের যুক্তি, ১৯৯৪-এর ওই রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ইসলাম ধর্মের কোনও বই খতিয়ে দেখেননি। সেখানে বলা রয়েছে, মসজিদ ইসলাম ধর্মের আবশ্যিক অঙ্গ। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিকে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া ও রাম লালা বিরাজমানের মধ্যে ভাগ করে দিতে বলেছিল। ধবন একে ‘পঞ্চায়েতের রায়’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর যুক্তি, ১৯৯৪-এর রায়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই ইলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল। তাঁর সঙ্গে বিচারপতি আবদুল নাজিরও একমত হন। তিনি মন্তব্য করেন, যে কোনও ধর্মেই প্রার্থনা একটি জরুরি ধর্মীয় অভ্যাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন