আইএস-এর বিরুদ্ধে ফতোয়া ধর্মগুরুদের

ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের কাজকর্মকে ইসলাম-বিরোধী আখ্যা দিয়ে ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করল ভারতের প্রায় এক ডজন উলেমা ও মুসলিম ধর্মগুরু। এঁরা সকলেই দেশের প্রভাবশালী ইসলামি ধর্মীয় সংগঠনগুলির প্রধান।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৩
Share:

ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের কাজকর্মকে ইসলাম-বিরোধী আখ্যা দিয়ে ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করল ভারতের প্রায় এক ডজন উলেমা ও মুসলিম ধর্মগুরু। এঁরা সকলেই দেশের প্রভাবশালী ইসলামি ধর্মীয় সংগঠনগুলির প্রধান। আরব দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ ছাড়া রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুনের কাছেও গত মাসে দেওয়া এই ফতোয়ার প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন ইসলামিক ডিফেন্স সাইবার সেলের প্রধান আব্দুর রহমান আনজারিয়া।

Advertisement

জামা মসজিদের শাহি ইমাম, অজমের শরিফ দরগার প্রধান এবং উলেমা কাউন্সিল ও দারুল উল মহম্মদিয়া-র মতো দেশের প্রধান ১২টি সংগঠনের প্রধানের স্বাক্ষরিত ১৫ খণ্ডের ফতোয়াটি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের কাছে পাঠিয়ে তার বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার অনুরোধ করেছেন ইসলামিক ডিফেন্স সাইবার সেলের প্রধান আনজারিয়া। তাঁর আর্জি— ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে অন্যান্য দেশের মুসলিম ধর্মগুরুরাও যেন এ ভাবেই ‘সভ্যতার শত্রু’ আইএস-এর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে।

পড়শি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ইতিমধ্যেই প্রভাব বাড়াতে শুরু করেছে আইএস। বাংলাদেশেও বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন নিজেদের আইএস-এর অনুসারী বলে দাবি করছে। ইতিমধ্যেই আইএস-কে নিষিদ্ধ করেছে ইসলামাবাদ। ভারতেও গত বছরের শেষ পর্বে মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ থেকে একাধিক যুবক আইএস সংগঠনে যোগ দিতে গিয়েছে— এমন তথ্য হাতে এসেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত এ দেশ ও বিদেশে বসবাসকারী মোট ১৭ জন ভারতীয় যুবক আইএসে নাম লিখিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলছে— সংখ্যার দিক থেকে এ’টি উদ্বেগজনক না হলেও, এ দেশের মুসলিম যুব সমাজের একটি অংশ যে আইএস-এর ধ্বংসাত্মক মৌলবাদী ভাবনার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন, তা স্পষ্ট। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই নিজেদের ভাবধারা বিস্তারে সক্রিয় রয়েছে আইএস।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে দেশের মুসলিম সমাজের বৃহত্তর ও প্রভাবশালী অংশ যে ভাবে আইএসের বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছে, তাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবেই মনে করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। মুসলিম ধর্মগুরুদের ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ‘ইসলামে হিংসার কোনও স্থান নেই। তাই যারা এ ভাবে হিংসার রাস্তা বেছে নিয়ে ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনে তৎপর হয়েছে, তারা এবং তাদের অনুগামীরা নিছক সন্ত্রাসবাদী ছাড়া আর কিছু নয়। এদের ভাবধারার সঙ্গে ইসলাম ও তার শিক্ষার বিন্দুমাত্র সাযুজ্য নেই।’ ফতোয়ায় বলা হয়েছে— ভারতের অধিকাংশ মুসলিম এক দিকে ইসলামিক শিক্ষা ও অন্য দিকে এ দেশের বৈচিত্র্যের মধ্যে বড় হয়ে উঠেছে। এই পরিবেশ অন্য ধর্মের প্রতি সম্মান ও দয়াশীল হতে শেখায়।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন