উভয় সঙ্কটে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং। তাঁর দল এনপিএফ বিজেপি-র সঙ্গে জোট চায়। কিন্তু রাজ্যে শুরু হওয়া বিক্ষোভের জেরে নির্বাচনের পক্ষে মত দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে জেলিয়াঙের পক্ষে। —ফাইল চিত্র।
জঙ্গি সংগঠনগুলি তো বটেই, নাগরিক সংগঠনগুলিও ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে নাগাল্যান্ডে। রাজনৈতিক দলগুলি জানিয়েছে, নাগা চুক্তি চূড়ান্ত না করে বিধানসভা নির্বাচন ‘চাপিয়ে দেওয়া’ হলে কোনও দল প্রার্থী দেবে না। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন কমিশন নাগাল্যান্ডে ভোট বাতিল করতে রাজি হয়নি। ফলে ১ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে বনধের ডাক দিচ্ছে সব নাগা সংগঠনের যৌথ মঞ্চ।
৩১ জানুয়ারি অর্থাৎ বুধবার নাগাল্যান্ড বিধানসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার কথা। নাগা সংগঠনগুলির বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে যদি শেষ পর্যন্ত জারি হয়ে যায় নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি, তা হলে ১ ফেব্রুয়ারি রাজ্য জুড়ে পালিত হবে বন্ধ।
এ দিকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়াই ভোট বয়কটের বিবৃতিতে সই করায় রাজ্য বিজেপির কার্যনির্বাহী সমিতির সদস্য (এসইএম) খেটো সেমাকে বরখাস্ত করেছে দল। প্রদেশ বিজেপি সভাপতি ভিসাসোলি লোংগু বলেন, "ভোটে প্রার্থী না দেওয়া বা বয়কট করা নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। শীঘ্রই যৌথ মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করবেন নেতারা।"
আরও পড়ুন: কেজরীর বাসভবনে ধুন্ধুমার, বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেল বিজেপি
১৯৯৮ সালে নাগা সংগঠনগুলি ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল। সে বার শাসক দল কংগ্রেস ও নির্দল প্রার্থীরা ছাড়া কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। তখনকার মতো বিনা বাধায় ক্ষমতায় এলেও 'বিশ্বাসঘাতকতার' মাশুল দিয়ে তার পর থেকে রাজ্যে আর ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি কংগ্রেস। সেই স্মৃতি মাথায় রেখে কোনও রাজনৈতিক দলই এ বার খোলাখুলি ভোটের পক্ষে মুখ খুলছে না।
নাগা সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ বলছে, আপাতত রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাক রাজ্যে। নাগা চুক্তির পরে নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনুযায়ী নির্বাচন হোক।
আরও পড়ুন: সংসদে রাহুলের আসন প্রথম সারিতে
নাগা চুক্তি চূড়ান্ত হওয়া অবশ্য এখনও অনিশ্চিত। কেন্দ্র চুক্তির শর্তাবলী প্রকাশ না করায় বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে। অশান্তি শুরু হয়েছে অসমের ডিমা হাসাও জেলায়। কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী আর এন রবি জানিয়েছেন, চুক্তি এখনও চূড়ান্ত জায়গায় আসেনি। দুই তরফে বিভিন্ন শর্ত নিয়ে মতান্তর রয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, "নাগাল্যান্ডবাসীর আবেগ ও মনোভাব আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু ভোট বয়কট তার সমাধান নয়। প্রধানমন্ত্রী নাগা সমস্যার দ্রুত সমাধানে বদ্ধপরিকর। তাঁর উপরে আস্থা রাখা হোক।"
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নাগাল্যান্ডে ভোটই চাইছে। আর বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে চাইছে এনপিএফ ও এনডিপিপি। ফলে ভোট হলে নাগাল্যান্ড এনডিএর হাতে থাকা প্রায় নিশ্চিত। নবগঠিত দল এনডিপিপিতে যোগ দেওয়ার জন্য দ্বাদশ বিধানসভা থেকে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন ১০ জন এনপিএফ বিধায়ক।