উত্তরপ্রদেশ, বিহারের উপনির্বাচনে বিজেপি হারার পরে বিরোধী ঐক্য দ্রুত দানা বাঁধছে। তাই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্বে বিজেপি বিরোধী এই ঐক্য ভাঙতে মরিয়া হয়ে আসরে নেমে পড়লেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) সমর্থন প্রত্যাহার করায় জগন্মোহন রেড্ডির দল অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় শুরু করেছে। তাকে রাজনৈতিক মূলধন করতে চাইছে বিজেপি। অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হলে মোদী জিতবেনই। এবং সে ক্ষেত্রে বিজেপি বলতে পারবে, লোকসভা ভোটের আগেই বিরোধীরা পরাস্ত হলেন। সেই কারণে আজ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অমিত শাহ বলেছেন, সরকারের পক্ষে সংখ্যা রয়েছে। সাহস থাকলে অনাস্থা আনুক বিরোধীরা।
বিরোধীরা অনাস্থা না আনলে বিজেপি বলতে পারবে যে, তাঁরা পালিয়ে গেলেন। রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রবাবু নায়ডুরা আলাপ-আলোচনা করে এই কৌশল মোকাবিলার রাস্তা খুঁজছেন।
মোদী-শাহের লক্ষ্য ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে যাতে কোনও ভাবেই মোদী-বিরোধী ফ্রন্ট গড়ে উঠতে না পারে। ২০১৪ এবং ২০১৯ যে এক নয়, সেটা বুঝতে পারছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। আর তাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কিছু কৌশল নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাল নবান্নে আসছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী
প্রথমত, রাহুলের নেতৃত্বকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া। এবং সনিয়া-পুত্রকে আক্রমণের মূল নিশানা করে অন্য আঞ্চলিক দলগুলিকে ছোট করে দেখানো। এই ভাবে একটি বিভাজন গড়াই বিজেপির লক্ষ্য। বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘সর্বভারতীয় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা খিচুড়ি সরকারের চেয়ে সব সময় ভাল।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্করের কথায়, ‘‘মানুষ ঠিক করবে, তারা কী চায়। মোদী সরকার না খিচুড়ি সরকার।’’
দ্বিতীয়ত, মায়াবতীর বিরুদ্ধে নতুন করে সিবিআই তদন্ত শুরু করা, যাতে ২০১৯-এ তিনি সপা-র সঙ্গে আঁতাঁত না করেন। একই ভাবে তৃণমূল, বিজু জনতা দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডির তদন্ত জোরদার করা।
তৃতীয়ত, অসন্তুষ্ট শরিক শিবসেনা, সরে যাওয়া টিডিপি-র বেশ কিছু সাংসদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলা।
চতুর্থত, ঠিক যে ভাবে অসমে হিমন্ত বিশ্বশর্মা কংগ্রেস থেকে সরে এসে বিজেপিকে সাহায্য করেছিলেন, সেই ভাবে নরেশ অগ্রবালকে দিয়ে উত্তরপ্রদেশে সপা-কে ভাঙার চেষ্টা। তৃণমূল ভাঙানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুকুল রায়কে। যদিও সেই কাজে তিনি এখনও সফল হননি।
সব শেষে বিজেপি এই প্রচার করতে চাইছে, প্রধানমন্ত্রী পদে বিরোধী পক্ষের সর্বসম্মত প্রার্থী নেই।
এখন এই সব কৌশলের জবাব বিরোধীরা কী ভাবে দেন, তাই দেখার।