Car Industry

Automobile Industry: পাখির চোখ বৈদ্যুতিক গাড়িই, উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্পে সায় দিয়ে বোঝাল কেন্দ্র

সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে গাড়ি সংস্থাগুলি। কিন্তু শিল্পের অন্দরে প্রশ্ন, ধুঁকতে থাকা গাড়ি শিল্পের জন্য এই প্যাকেজ আদৌ যথেষ্ট কি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৫০
Share:

ছবি সংগৃহীত

তেলের খরচ এবং দূষণ কমাতে কেন্দ্র যে বৈদ্যুতিক গাড়িকে পাখির চোখ করছে, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে মোদী সরকার। আজ যেন সে কথা মনে করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে গাড়ি শিল্প এবং ড্রোন সংস্থাগুলির জন্য উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্পে (পিএলআই) সায় দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। কারণ কেন্দ্র বলেছে, মূলত বৈদ্যুতিক এবং হাইড্রোজেন জ্বালানির আধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত গাড়ি এবং তার যন্ত্রাংশ তৈরির সংস্থাগুলি এই আর্থিক উৎসাহের সুবিধা পাবে। যে সমস্ত সংস্থা এখন গাড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত নয়, তারাও যুক্ত হতে চাইলে স্বাগত। পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পের আয়তন ২৬,০৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ড্রোনের জন্য তিন বছরে বরাদ্দ ১২০ কোটি।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে গাড়ি সংস্থাগুলি। কিন্তু শিল্পের অন্দরে প্রশ্ন, ধুঁকতে থাকা গাড়ি শিল্পের জন্য এই প্যাকেজ আদৌ যথেষ্ট কি? অনেকেরই বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমে বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে চর্চা আলাদা নজর টানছে ঠিকই। তবে বাস্তবে সহায়ক প্রযুক্তি এবং গাড়ির দাম বেশি হওয়ায়, পরিকাঠামো তৈরি না-থাকায় এমন গাড়ির চাহিদা আদৌ বাড়ছে না। অথচ কিছুটা ‘দুয়োরানি’ হয়ে থাকছে পেট্রল, ডিজ়েল-চালিত গাড়ি। গত ১০ বছরে কেন্দ্র এবং রাজ্য স্তরে নানা ভর্তুকি, জিএসটি-তে ছাড় দেওয়ার পরেও বিদেশের মতো এ দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা তেমন বাড়েনি। অথচ সরকার তাতেই জোর দিচ্ছে। যার অর্থ, আগের সেই সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। তাদের মতে, যে হাইড্রোজেন জ্বালানি নির্ভর প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরেও তা কার্যকর হওয়ার দিশা নেই। পাশাপাশি এই প্রকল্প মূলত রফতানি বাজার ধরার লক্ষ্যে হলেও বিদেশের বাজার তেল নির্ভর গাড়িরই। সেখানে এখনও বৈদ্যুতিক গাড়ির অংশীদারি নগণ্য। ফলে কোন বাজার ধরতে ঝাঁপাবে সংস্থাগুলি!

Advertisement

সংবাদমাধ্যমে বজাজ অটো-র কর্তা রাজীব বজাজ বলেছেন, ভর্তুকির উপর নির্ভর করে কোনও শিল্প এগোতে পারে না। শিল্পকে এগোতে হয় পাকাপোক্ত কৌশল এবং প্রতিযোগিতার মানসিকতা নিয়ে।

দেশের উৎপাদন শিল্পকে শক্তিশালী করে রফতানি বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থায় ভারতের বিভিন্ন পণ্যের যোগদানের কথা অনেক দিন ধরেই বলে আসছে মোদী সরকার। সেই লক্ষ্যে গত বছর থেকে কয়েকটি পর্যায়ে ১৩টি ক্ষেত্রের জন্য মোট ১.৯৭ লক্ষ কোটি টাকার পিএলআই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়। গত নভেম্বরে জানানো হয়েছিল, তার অংশ হিসেবে গাড়ি শিল্পের জন্য ৫৭,০৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। কিন্তু আজ যে সংশোধিত প্যাকেজ ঘোষণা করা হল তাতে এক ধাক্কায় সেই বরাদ্দ বিপুল কমানো হয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, যে শিল্পটি অতিমারির আগে থেকেই সমস্যার মুখে তার জন্য এই বরাদ্দ কি যথেষ্ট? বিশেষ করে এই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও যেখানে নিত্যদিন কড়া টক্কর চলছে সংস্থাগুলির মধ্যে? খরা চলছে সেমিকন্ডাক্টর চিপের মতো যন্ত্রাংশের?
কেন্দ্রের অবশ্য ব্যাখ্যা, বৈদ্যুতিক ব্যাটারিচালিত এবং হাইড্রোজেন জ্বালানির গাড়িতেই এখন বেশি নজর দিতে চায় তারা। প্যাকেজ তৈরি হয়েছে সে ভাবেই। তা ছাড়া বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য ‘ফেম’ এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাটারির জন্য উৎসাহ প্রকল্প রয়েছে। রয়েছে জিএসটি ছাড় এবং আগের তুলনায় নিচু হারে কর্পোরেট কর। সব মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির গাড়ি শিল্পের জন্য উৎসাহ প্রকল্প পর্যাপ্ত। নতুন প্রযুক্তির গাড়ি তৈরি করতে যে অতিরিক্ত পরিকাঠামো লগ্নির কথা শিল্প বলছে, সেই পুঁজির একাংশ তারা হাতে পাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমেই।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন