গণহারে গণপিটুনির দায় বিরোধীদের উপর চাপালেন মোদী

রেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইস্তক এমন ঘটনা বহু বার ঘটেছে। কিন্তু শত সমালোচনাতেও একটি মন্তব্যও করেননি মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০৫:১৪
Share:

একের পর এক গণপিটুনিতে মৃত্যু।

Advertisement

কখনও গো-রক্ষার নামে। কখনও দলিত হওয়ার ‘অপরাধে’। কখনও স্রেফ গুজবে ভর করে।

একটা-দু’টো নয়। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইস্তক এমন ঘটনা বহু বার ঘটেছে। কিন্তু শত সমালোচনাতেও একটি মন্তব্যও করেননি মোদী।

Advertisement

অবশেষে তিনি মুখ খুললেন। তবে কোনও সাংবাদিক সম্মেলনে নয়। গত চার বছরে একটিও সাংবাদিক সম্মেলন না করা মোদী একটি সংবাদসংস্থাকে ই-মেল মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে গণপিটুনি নিয়ে মুখ খুললেন। আর মুখ খুলে গণপিটুনি নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলে দুষলেন বিরোধীদের! গত তিন বছরে দাদরির মহম্মদ আখলাখ থেকে অলওয়ারে পেহলু খান— প্রায় সবক’টি ঘটনাতেই গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীদের দিকে আঙুল উঠলেও মোদীর দাবি, এ সব নিয়ে রাজনীতি করাটা বিরোধীদের বিকৃত মানসিকতা!

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সংখ্যা দিয়ে এ সব ঘটনার বিচার করে রাজনীতি করাটা হাস্যকর। হিংসা আর অপরাধের ব্যাপারে এক সঙ্গে বিরোধিতা না করে যারা লাভ তোলার কথা ভাবছে, সেটা তাদের বিকৃত মানসিকতার পরিচয়। একটি ঘটনা হলেও সেটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের।’’ শান্তি ফেরাতে সকলকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে এবং এ ব্যাপারে রাজ্যগুলিকে কড়া সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেই ক্ষান্ত দিয়েছেন মোদী।

আরও পড়ুন: আজানে কি শব্দদূষণ, মেপে দেখার নির্দেশ

গণপিটুনি নিয়ে সব স্তরের ক্ষোভ, বিরোধীদের লাগাতার সমালোচনা, এমনকি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে আক্রমণের পরেও যিনি চুপ থেকেছেন, সেই মোদীর এমন মন্তব্যে স্তম্ভিত বিরোধীরা। কংগ্রেসের প্রশ্ন, ‘‘অধিকাংশ ঘটনা বিজেপি শাসিত রাজ্যে হচ্ছে। বিজেপি নেতারাই অভিযুক্তদের মালা পরাচ্ছেন, তাঁদের মামলার খরচ যোগাচ্ছেন, পুরস্কৃত করছেন! তা হলে এই দ্বিচারিতা কেন?’’ এক বিরোধী নেতার কথায়, ‘‘সমালোচনা মানতে না পেরেই মোদী বিরোধীদের দুষছেন!’’

বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, বেকারি, দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধি-সহ যে সব বিষয়কে হাতিয়ার করে মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন, তাঁর জমানায় সেগুলির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দলিত ও মহিলা নিগ্রহ-গণপিটুনির মতো সমস্যা, যাতে সরাসরি নাম জুড়েছে গেরুয়া শিবিরের। বিষয়টি বুঝেছেন মোদী নিজেও। তাই তিনি সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছেন, সম্প্রতি সংসদে পাশ হওয়া দলিত ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির আইনকে পুঁজি করে প্রচার চালাতে।

তবে বিরোধীরা যে জমি ছাড়তে নারাজ, তা বুঝিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য, গোটা সাক্ষাৎকারে মোদী না বেকারি নিয়ে যুৎসই কিছু বলতে পেরেছেন, না রাফালের দাম খোলসা করেছেন। এমনকী সরকারের তিনটি বড় ‘সাফল্য’ও বলতে পারেননি। এ বারে এগুলো নিয়েই প্রচারে নামবে দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন