Uniform Civil Code

Uniform civil code: বিজেপি-শাসিত রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিই লক্ষ্য

ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডে ওই আইন যাতে সুষ্ঠু ভাবে প্রয়োগ করা যায়, তার জন্য কমিটি গড়েছে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ০৮:৩০
Share:

ফাইল ছবি

রাম মন্দির নির্মাণ, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে এ বার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনার প্রস্তুতি তলে তলে শুরু করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডে ওই আইন যাতে সুষ্ঠু ভাবে প্রয়োগ করা যায়, তার জন্য কমিটি গড়েছে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে, অসম বা ভোটমুখী হিমাচল প্রদেশও ওই আইন আনার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কবে গোটা দেশের জন্য ওই আইন আনা হবে, তা স্পষ্ট করা না হলেও কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও রাজ্য এ বিষয়ে কেন্দ্রের সাহায্য চাইলে কেন্দ্র তা করতে রাজি।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে বিজেপি যে রাজ্যগুলিতে একক ভাবে ক্ষমতায় রয়েছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই রাজ্যগুলিতে ওই আইন আনার কথা ভেবেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব খুব ভাল করেই জানেন, ওই বিল সংসদে এলে প্রবল বিরোধের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে ওই বিল পাশ করিয়ে পরিস্থিতি আঁচ করে নিতে চাইছে দল। অন্য দিকে ওই আইনের কোন কোন বিষয়গুলি নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি তুলতে পারেন, তা আগাম বুঝে নিতে রাজ্যগুলিতে ওই আইনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পক্ষপাতী বিজেপি নেতৃত্ব।

তবে দল খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হলে মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। বিষয়টির সঙ্গে সংখ্যালঘু সমাজের ভাবাবেগ জড়িত থাকায় স্বভাবতই ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় পথে নামবে সংখ্যালঘু সমাজ ও বিরোধী দলগুলি। দল মনে করছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই বিরোধিতাকে কাজে লাগিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করার সুযোগ পাবে বিজেপি। তাদের মতে, এ নিয়ে ‘তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক’ দলগুলি সংখ্যালঘুদের সমর্থনে যত সুর চড়াবে, তত একজোট হবে হিন্দু ভোট। তাই দলের একাংশ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ওই বিল আনার পক্ষপাতী। যাতে মেরুকরণের হাওয়ায় ভর করে তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরতে পারে দল।

Advertisement

বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, দত্তক, উত্তরাধিকার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে দেশে নানা ধর্মের ও জনজাতিদের নিজস্ব আইন রয়েছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে দেশের সব নাগরিককেই একই ধাঁচের পারিবারিক আইন মেনে চলতে হবে।

সে ক্ষেত্রে শরিয়ত আইন গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। বিজেপির দাবি, এতে সমাজে অসাম্য ঘুচবে, মহিলাদের অধিকার বাড়বে এবং সংবিধান দেশের নাগরিকদের জন্য যে সাম্যের কথা বলেছে, সেই সাম্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। সেই লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অঙ্গ হিসাবে, ওই আইন রূপায়ণের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়েছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। বিজেপি সূত্রের মতে, মধ্যপ্রদেশে, হিমাচল, উত্তরপ্রদেশ, অসমেও ওই ধাঁচের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। কমিটির আইন সংক্রান্ত প্রস্তাব খতিয়ে দেখার জন্য তা কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যগুলি।

সূত্রের মতে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ওই আইন পাশ হলে কেন্দ্রও সেই ধারাগুলিকে আইনের স্বীকৃতি দেবে। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘‘দেশের মানুষ মনে করেন, সকলের সমানাধিকারের লক্ষ্যে এক ধরনের আইনের প্রয়োজন রয়েছে। বিজেপিও এক দেশ, এক আইনের পক্ষে। দেশের মানুষও এখন অভিন্ন দেওয়ানিবিধির পক্ষে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন