Narendra Modi

নেহরু-স্মরণ মোদীর, চলছে বিতর্ক-জল্পনা

কংগ্রেসের বরাবরের অভিযোগ, মুখে ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাসের’ মন্ত্র আওড়ালেও, আদতে মোদী বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৬
Share:

নরেন্দ্র মোদী।

দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীও। যদিও নেহরু-গাঁধী পরিবারের প্রতি মোদী যে ভাবে প্রায়ই বিষোদ্‌গার করেন, যে ভাবে দেশের যে কোনও সমস্যার পিছনে নেহরু-যোগ খুঁজে পায় বিজেপি, তাতে প্রধানমন্ত্রীর এই নেহরু-স্মরণ কতটা আন্তরিক, তা নিয়ে রাজনৈতিক চর্চায় মশগুল রইল রাজধানী। একই ভাবে আলোচনা চলল, রাহুলের টুইটেও মোদীর জন্য সূক্ষ্ম খোঁচা রইল কি না, তা নিয়ে!

Advertisement

শনিবার মোদীর টুইট, “দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে তাঁর জন্মজয়ন্তীতে আমার নম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।” আর রাহুল লিখেছেন, “আজ দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর জন্মজয়ন্তী পালন করছে দেশ। সম্প্রীতি, সাম্য এবং আধুনিকতার ভিতের উপরে এই দেশ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন যিনি।”

কংগ্রেসের বরাবরের অভিযোগ, মুখে ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাসের’ মন্ত্র আওড়ালেও, আদতে মোদী বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ভোটে জিততে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিরও তোয়াক্কা করেন না। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে গুজরাতে ঘটা হিংসাকে তার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তাঁরা। একই সঙ্গে রাহুলদের দাবি, মোদী জমানায় ভরাডুবি হয়েছে ভারতীয় অর্থনীতির। বহু লোক কাজ খুইয়েছেন। বেকারত্ব মাত্রাছাড়া। জিডিপি তলানিতে। ক্ষুধা সূচকে ঠাঁই শেষ সারিতে। অথচ তার মধ্যেও মুনাফা ফুলেফেঁপে উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ গুটিকয় শিল্পপতির। ব্যবধান বেড়েছে ধনী-দরিদ্রের। একই সঙ্গে, কংগ্রেস সমেত বিরোধীরা হামেশাই বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির হাত ধরে এগিয়ে চলার বদলে, প্রাচীন পরম্পরার ভারত বেশি আকর্ষণীয় ঠেকে বিজেপির কাছে। যেখানে মনে করা হয়, পুরনো ভারতে সব ছিল সেরা। এই তিন বিষয়কে খুঁচিয়ে তুলতেই রাহুল নিজের টুইটে নেহরুর সম্প্রীতি, সাম্য, আধুনিকতা প্রিয়তার কথা তুলে ধরেছেন কি না, তা ঘিরে চর্চা যথেষ্ট।

Advertisement

আরও পড়ুন: অসমের হাসপাতালে অর্থসাহায্য সচিনের

আলোচনার কেন্দ্রে মোদীর টুইটও। এমনিতে সেখানে বিতর্কের ছিটেফোঁটা নেই। কিন্তু ভোট-প্রচারের জনসভায় তো বটেই, খাস সংসদে দাঁড়িয়েও নেহরু-গাঁধী পরিবারের সমালোচনায় বার বার সরব হয়েছেন মোদী। অভিযোগ করেছেন, স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত দেশের যাবতীয় উন্নতি ও প্রগতির কৃতিত্ব শুধু ওই একটি পরিবারকে সমর্পণ করতে চায় কংগ্রেস। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের সময়ে কাশ্মীর প্রসঙ্গে আলোচনায় নেহরুর নীতির বিষয়ে বার বার সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি। এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী এক বার সংসদে বলেছিলেন, “আমাদের বিশ্বাস, সর্দার বল্লভভাই পটেল দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলে, ভারতের চেহারা অনেকটাই আলাদা হত। এই ভাবনা ভুল হতে পারে। কিন্তু এটি আমাদের বিশ্বাস।” লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর আসনে কেন শুধুমাত্র তিন প্রাক্তনের নাম খোদাই করা আছে, সেই প্রশ্নও সংসদে দাঁড়িয়ে তুলেছিলেন তিনি। তাই অনেকের জিজ্ঞাসা, নেহরু-স্মরণে তাঁর এ দিনের টুইটও কি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিছক কর্তব্য?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন