Narendra Modi

বিশ্বে মন্দার কথাই মনে করালেন মোদী

সংসদের বাজেট অধিবেশনের আগে সরকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে আজ প্রায় সব বিরোধী দলের নেতারাই দাবি তুলেছেন, অর্থনীতির সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:১৫
Share:

সর্বদলীয় বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।—ছবি পিটিআই।

সাত শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির হার এখন দিবাস্বপ্ন। পাঁচ শতাংশ ছোঁয়া যাবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন। শনিবারের বাজেটের আগে শুক্রবার সকালে আর্থিক সমীক্ষা পেশ হবে। তাতে বলা হবে, অর্থ মন্ত্রক চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার কোথায় পৌঁছবে বলে মনে করছে। আগামী অর্থবর্ষে বৃদ্ধি কোথায় পৌঁছবে বলে অর্থ মন্ত্রকের আশা!

Advertisement

সংসদের বাজেট অধিবেশনের আগে সরকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে আজ প্রায় সব বিরোধী দলের নেতারাই দাবি তুলেছেন, অর্থনীতির সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তা শুনে প্রধানমন্ত্রী গোটা বিশ্বের অর্থনীতির প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী পরে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী জানান, বাজেট অধিবেশনে অর্থনীতির পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবেই। তবে বিশ্বের অর্থনীতির প্রেক্ষিত মাথায় রেখে ভারত কী কী সুবিধা নিতে পারে, তারও আলোচনা চাই।’’ এ কথা বলে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী? সরকারের এক মন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, এ দেশে অর্থনীতির ঝিমুনিকে আলাদা করে দেখলে চলবে না। বিশ্বের সামগ্রিক অর্থনীতির প্রেক্ষিতে দেখতে হবে।’’

কংগ্রেস অবশ্য বলছে, দেশের বর্তমান অর্থনীতিকে শুধু জিডিপি দিয়ে মাপলে হবে না, মাপতে হবে বিশ্ব দুর্গতি-সূচকের নিরিখেও।

Advertisement

নতুন বছরের শুভেচ্ছা এবং সরকার সব বিষয়ে আলোচনার জন্য তৈরি— নিয়মমাফিক দু’টি কথার পরে প্রধানমন্ত্রী আজ শুধু অর্থনীতির বিষয়েই মন্তব্য করেছেন। সর্বদলীয় বৈঠকের পর বিরোধী নেতাদের মত, প্রধানমন্ত্রী আসলে নিজেই আর্থিক সমীক্ষার আগেভাগে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কথা তুলে রাখলেন। যাতে পরে সে দিকে আঙুল তোলা যায়।

দ্বিতীয় বার মোদী ক্ষমতায় ফেরার পরে জুলাইয়ে আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, চলতি অর্থ বছরের আর্থিক বৃদ্ধি ৭ শতাংশে পৌঁছবে। প্রথম তিন মাসে বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ, তার পরের তিন মাসে ৪.৫ শতাংশে নেমে আসার পরে এখন সরকারি পরিসংখ্যান মন্ত্রকই পূর্বাভাস করছে, গোটা বছরে বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশেই আটকে যাবে। আইএমএফ-এর পূর্বাভাস আরও কম, ৪.৮ শতাংশ। ফলে আর্থিক সমীক্ষাতেও বৃদ্ধির হার সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী কাটছাঁট করতে হবে।

এর আগেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অর্থনীতির ঝিমুনির জন্য আন্তর্জাতিক মন্দাকে দায়ী করেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, আর্থিক বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নেমে আসাটা অস্থায়ী বিষয়। আন্তর্জাতিক মন্দার ফল। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ উল্টে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার জন্য ভারতের অর্থনীতিকেই দায়ী করেছিলেন। অর্থনীতিবিদদের মতে, কেন্দ্র অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বরে কর্পোরেট সংস্থাগুলির আর্থিক ফলাফল বলছে, ব্যবসা চাঙ্গা হয়নি। বাজারে কেনাকাটা ও লগ্নি, দুই ক্ষেত্রেই চাহিদায় মন্দার টান। সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ফলেও ব্যবসা মার খাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন