নেতাজিই তাস, আবেকে ইম্ফল নিয়ে যাবেন মোদী

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে যখন উত্তর-পূর্ব ভারত উত্তাল, সেই সময়েই এই অঞ্চলকে আন্তর্জাতিক নজরে নিয়ে আসতে চলেছে মোদী সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১৯
Share:

চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর জন্য ছিল দক্ষিণের মামল্লপুরম। জাপানের জন্য উত্তর-পূর্ব।

Advertisement

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে যখন উত্তর-পূর্ব ভারত উত্তাল, সেই সময়েই এই অঞ্চলকে আন্তর্জাতিক নজরে নিয়ে আসতে চলেছে মোদী সরকার। আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুয়াহাটি এবং ইম্ফল সফর করতে চলেছেন। সেখানে জাপানের অর্থে চলা ১২টি প্রকল্পের কাজ এবং খুঁটিনাটি আবে-কে দেখাবেন মোদী। চেষ্টা থাকবে এই অঞ্চলের জন্য আরও বিনিয়োগ টানার। সঙ্গে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং জাপানের অতীত সংযোগের তাসটিকেও নতুন করে খেলার কৌশল নেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ইম্ফলের সঙ্গে জাপানের যে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে, তাকে কূটনৈতিক প্রয়োজনে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হবে ওই সফরে।

ইম্ফলে জাপান এবং মিত্রশক্তির মধ্যে যুদ্ধের ৭৫ বছর উপলক্ষে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে শান্তি মিউজিয়াম। সেই ইম্ফল যুদ্ধে জাপানি সেনার সঙ্গে ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনী। প্রায় ৭০ হাজার জাপানি সেনার মৃত্যু হয়েছিল। সূত্রের বক্তব্য, জাপানের নিপ্পন ফাউন্ডেশনের অর্থে তৈরি এই মিউজিয়ামটি এবং নেতাজিকে ঘিরে আবেগ মিশিয়ে দেওয়া হবে আবে-র আসন্ন সফরে দ্বিপাক্ষিক আলোচ্যসূচিতে। কেন্দ্রের দাবি, এই প্রথম কোনও জাপানি প্রধানমন্ত্রী যে ইম্ফল সফরে যাচ্ছেন, তার নেপথ্যে প্রধান ভূমিকাটি মোদীর। তিনিই উদ্যোগী হয়ে এই পরিকল্পনা পৌঁছে দিয়েছিলেন জাপানের দরবারে। আপাতত অসম, সিকিম, মেঘালয়, ত্রিপুরা মিজোরামে চলা প্রকল্পগুলিতে অর্থ জুগিয়েছে জাপান। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জাপানের এই সহায়তা এবং আবে-র গুয়াহাটি-ইম্ফল সফর— ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’র অন্তর্গত বলেই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক।

Advertisement

আরও পড়ুন: ওয়াক আউট বিজেপির, আস্থাভোটে জয়ী উদ্ধব সরকার

আজ নয়াদিল্লিতে দু’দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের (টু প্লাস টু) বৈঠক হল। এই কাঠামোয় ভারত এবং জাপানের মধ্যে এটি প্রথম বৈঠক। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘‘এই টু প্লাস টু বৈঠকটি দু’দেশের সামনেই প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতাকে আরও জোরদার করার দরজা খুলে দিচ্ছে। এর ফলে ভারত এবং জাপানের মধ্যে বিশেষ কৌশলগত সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক স্তরে অংশীদারি আরও গভীরতা পাবে।’’ সূত্রের খবর, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং চিনের একাধিপত্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে। চিনের প্রতি ইঙ্গিত করে জাপানের তরফ থেকে এই বৈঠকে বলা হয়েছে, শান্তি, সমৃদ্ধি এবং উন্নয়ন প্রয়োজন এই গোটা অঞ্চলের জন্য।

শুধু ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলই নয়, গোটা এশিয়াতেই ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে চলা চিনের প্রভাব ঠেকাতে জাপানের মতো দেশের সঙ্গে অক্ষ রচনা অত্যন্ত জরুরি নয়াদিল্লির জন্য। আসন্ন বৈঠকে তা বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন