নরেন্দ্র মোদী
নোট বাতিল করলেই কালো টাকা উবে যাবে বলে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট দেখিয়ে দিয়েছে, সাদা, কালো সব টাকাই ব্যাঙ্কে ঢুকে পড়েছে।
নরেন্দ্র মোদী তবু হার মানতে রাজি নন। তিনি চান, বাতিল নোট জমার যে তথ্যভাণ্ডার মিলেছে, তা খুঁড়ে কর দফতরের অফিসাররা কালো টাকার মালিকদের খুঁজে বের করুক। মোদীর দাওয়াই, আয়কর ও পরোক্ষ কর দফতর ঢেলে সাজা হোক। তথ্য বিশ্লেষণ এবং তদন্ত শাখায় আরও বেশি অফিসার-কর্মীকে কাজে লাগানো হোক। আজ তাই কর অফিসারদের আরও সক্রিয় হয়ে কর ফাঁকির অর্থ ও সম্পত্তি খুঁজে বের করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, প্রতি বছরই কর আদায় বাড়াতে অফিসাররা চেষ্টা করছেন ঠিকই। কিন্তু যতখানি কর আদায়ের আশা করা হচ্ছে, ততখানি হচ্ছে না।
আজ দিল্লিতে কর অফিসারদের সম্মেলন ‘রাজস্ব জ্ঞান সঙ্গম’-এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘অসৎ লোকেদের কুকর্মের মূল্য সৎ ব্যক্তিরা দিতে পারেন না।’’ রাজস্ব কর্তাদের যুক্তি, কালো টাকার খোঁজে ‘অপারেশন ক্লিন মানি’-তে নোট বাতিলের পরে জমা অর্থ থেকেই ১৮ লক্ষ সন্দেহজনক লেনদেন চিহ্নিত হয়েছে। যেখানে, ব্যাঙ্কে নোট জমার সঙ্গে অ্যাকাউন্ট মালিকদের কর জমার পরিমাণ খাপ খায়নি। এ বার ওই ‘অপারেশন’-এর দ্বিতীয় পর্বে, সন্দেহজনক ব্যক্তিরা কতখানি বিপজ্জনক, তার ভিত্তিতে তাদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ব্যাঙ্কে নোট জমার সঙ্গে অন্য তথ্য মিলিয়ে কালো টাকার কারবারিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তার পরে পুরোদমে তদন্ত শুরু হবে। এই কারণেই প্রধানমন্ত্রী তথ্য বিশ্লেষণ ও তদন্তে আরও বেশি জোর দিতে বলেছেন।
যে পরিমাণ কর সরকারের প্রাপ্য, তা আদায় করতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাধান খোঁজার জন্যও অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। তাঁর যুক্তি, সরকারের প্রাপ্য বিরাট অঙ্কের রাজস্ব বিভিন্ন মামলায় আটকে রয়েছে। মামলার জট খুলে এই টাকা উদ্ধারের জন্যও কর অফিসারদের ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, এই অর্থ গরিব কল্যাণে লাগানো যাবে। জিএসটি-র পুরো ফায়দা তুলতে মোদীর দাওয়াই, যে সব ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসার পরিমাণ বছরে ২০ লক্ষ টাকার কম, তাঁদেরও জিএসটি ব্যবস্থায় নাম নথিবদ্ধ করাতে হবে।
দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জাতপাত, আবর্জনা, সাম্প্রদায়িকতা-মুক্ত ‘নতুন ভারত’ তৈরি করতে পাঁচ বছরের লক্ষ্য স্থির করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
কালো টাকার বিরুদ্ধে কর অফিসারদের কোমর বেঁধে মাঠে নামাতে তিনি জাতীয়তাবাদের সুড়সুড়িও দিয়েছেন। বলেছেন, ২০২২-এ স্বাধীনতার ৭৫-তম বছরের মধ্যে উন্নত কর প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে। কাজ করতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর ‘ভোকাল টনিক’-এর পাশাপাশি কর অফিসারদের উদ্বুদ্ধ করতে আজ ‘রাজস্ব জ্ঞান সঙ্গম’-এ সাধগুরু জাগ্গি বাসুদেবকেও নিয়ে আসা হয়েছিল। তিনি ‘ইনার ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজিস ফর ওয়েল বিইং’-এর মাধ্যমে উদ্যমী হওয়ার রাস্তা বাতলেছেন।