উন্নয়নের ‘স্বপ্ন’ ছড়িয়েই বিহারে ভোটে লড়বে বিজেপি।
আম-আদমিকে সেই স্বপ্ন দেখাতে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দলের অন্দরের খবর, জনসভার মঞ্চ থেকে বিহারকে বিশেষ আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারেন মোদীজি।
সব কিছু ঠিক থাকলে ২৫ জুলাই বিহারের মজফফরপুর থেকে দলের নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। দু’দিন আগে দিল্লি থেকে পটনায় পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রী অনন্ত কুমার এবং সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অনন্ত কুমারকে বিধানসভা নির্বাচনের পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করেছেন। ভূপেন্দ্র দলের বিহারের পর্যবেক্ষক। সাংসদ সি আর পাটিল এবং পবন শর্মাকে তাঁর সহকারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফর ও বিধানসভা ভোটের রণনীতি ঠিক করতে বিজেপি রাজ্য দফতরে দলীয় নেতাদের সঙ্গে কয়েক ঘন্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ইতিমধ্যেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছেন, বিহারে মুখ্যমন্ত্রী পদে কারও মুখ নয়, নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখেই বিধানসভার যুদ্ধে নামবেন তাঁরা।
দলের এক রাজ্যস্তরের নেতা বলেন, ‘‘বিহারকে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার ব্যবস্থা প্রায় পাকা। দলীয় নেতাদের সে বিষয়ে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। সভামঞ্চ থেকে সেই কথা ঘোষণা করা হবে।’’ দলীয় সূত্রে খবর, বিহারের জন্য কী কী উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করা যেতে পারে তা নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। মৎস্য থেকে ডেয়ারি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এফসিআইয়ের গুদাম— সব নিয়েই প্রস্তাব জমা পড়েছে। জানা গিয়েছে, বিহারে নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে গ্রামোন্নয়ন থেকে শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়েও বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রতিটি প্রকল্পের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ঘোষণা এবং কত দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে তা-ও জানিয়ে দেবেন।
কেন মজফফরপুর থেকে প্রচার শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী? প্রদেশের নেতাদের জবাব— ওই শহরে বিজেপির প্রাধান্য রয়েছে। লাগোয়া মিথিলা, সারন, তিরহুট লোকসভা কেন্দ্রেও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে বিজেপির। ওই শহরের কাছেই রয়েছে কোশী এলাকা। গত লোকসভা নির্বাচনে মোদী-হাওয়া থাকলেও কোশী এলাকার একটি মাত্র কেন্দ্র বিজেপি জিতেছে। ওই এলাকায় মূলত যাদব সম্প্রদায়ের বসবাস। লালুপ্রসাদের সঙ্গে পাপ্পুর বিচ্ছেদের পর যাদবরা বিজেপির দিকেও ঝুঁকতে পারেন। তাঁদের কাছে টানতে প্রধানমন্ত্রীর সভাকে কাজে লাগানো হবে। পূর্ণিয়া, গোপালগঞ্জ এবং ভাগলপুরের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত শহরও রয়েছে উত্তর বিহারে। ওই
সভা থেকে তাঁদের কাছেও উন্নয়নের বার্তা পৌঁছবে।
বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, মজফফরপুরকে কেন্দ্র করেই এক সময়ে লোকসভায় পৌঁছেছিলেন নীতীশ কুমারের রাজনৈতিক গুরু জর্জ ফার্নান্ডেজ। স্বাভাবিক ভাবে রাজনৈতিক গুরুর কর্মভূমিতে সভা করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর উপরে কিছুটা হলেও চাপ তৈরি করতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী।
শুধু দলীয় সভা নয়, পটনা বিমানবন্দরের কাছে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চ’-এর অনুষ্ঠানের সূচনা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। পটনা আইআইটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং রেলের একটি অনুষ্ঠানেও হাজির থাকার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর।